প্ৰসন্নকুমার সর্বাধিকারী (১৮২৫ – ১৮৮৬) রাধানগর-হুগলী। ‘সঙ্গীত লহরী’ ও ‘তীৰ্থভ্ৰমণ গ্রন্থের রচয়িতা যদুনাথ। গ্রামের পাঠশালায় সংস্কৃত, বাংলা ও ফারসী শিখে হিন্দু কলেজে প্ৰবেশ করেন। এখানে কৃতিত্বের সঙ্গে জুনিয়র ও সিনিয়র বৃত্তি পাশ করে স্বর্ণপদক ও পুরস্কার পান। শিক্ষান্তে কিছুদিন ঢাকা কলেজে অধ্যাপনার পর তিনি মুর্শিদাবাদ রাজসরকারে উচ্চপদ লাভ করেন। তারপর বিদ্যাসাগরের চেষ্টায় প্ৰথমে সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক ও পরে অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত হন। এই সম্মান তিনি ভিন্ন অন্য কোনও কায়স্থের ভাগ্যে ঘটে নি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিরোধ ঘটায় তাকে অধ্যক্ষের পদ ত্যাগ করতে হয়, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে সকল ছাত্র, অধ্যাপক ও কর্মচারীরা কলেজ ত্যাগ করলে তিনি পুনর্নিযুক্ত হন। কিছুদিন পরে প্রেসিডেন্সী বিভাগের পরিদর্শক করে সংস্কৃত কলেজ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর বহরমপুর কলেজে অধ্যক্ষ ও প্রেসিডেন্সী কলেজে ইতিহাস ও ইংরেজীর অধ্যাপক হয়েছিলেন। বিদ্যাসাগর তাকে সংস্কৃত এবং তিনি বিদ্যাসাগরকে ইংরেজী শেখাতেন। গণিত ও জ্যোতিষে বিশেষ আগ্রহ ছিল। সূৰ্যগ্ৰহণ সম্বন্ধে তৎকালে প্রচলিত দেশী ও বিদেশী ধারণা ভ্ৰান্ত প্ৰমাণ করে পণ্ডিতসমাজের শ্রদ্ধা আকর্ষণ করেন। উত্তরকালে বাংলা ভাষায় অঙ্কশাস্ত্ৰ ও অঙ্কের পরিভাষা সৃষ্টি করে বীজগণিত ও পার্টিগণিত রচনা তাঁর অক্ষয় কীর্তি। মধুসূদন ও বিদ্যাসাগরের বিপদের দিনে সাহায্য করে মানবতার পরিচয় দেন। মহাভারত অনুবাদে কালীপ্রসন্ন সিংহকে, অভিধান প্রণয়নে তারানাথ তর্কবাচস্পতিকে ও শাস্ত্ৰগ্ৰন্থ প্রকাশে সত্যব্ৰত সমাধ্যায়ীকে সাহায্য করেন। বিখ্যাত ডাক্তার সূৰ্যকুমার তাঁর অনুজ।
পূর্ববর্তী:
« প্ৰসন্নকুমার রায়
« প্ৰসন্নকুমার রায়
পরবর্তী:
প্ৰসন্নকুমার সেন »
প্ৰসন্নকুমার সেন »
Leave a Reply