প্ৰসন্নকুমার আচাৰ্য, মহামহোপাধ্যায় (২১-৪-১৮৯০ – ১-১২-১৯৬০) চট্টগ্রাম-যজ্ঞশালা-ত্রিপুরা। রাজচন্দ্ৰ। কুমিল্লা জেলা স্কুল থেকে এন্ট্রান্স এবং চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এফ.এ. ও বি.এ. পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হন। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিলালিপি ও প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস সহ এম.এ. পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্ৰথম স্থান অধিকার করেন। সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ইউরোপে সংস্কৃত সাহিত্যে শিক্ষালাভের জন্য একমাত্র তিনিই ভারত সরকারের বৃত্তিলাভ করেন (১৯১৪)। অল্পকালের মধ্যেই তিনি অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-পদ্ধতির সঙ্গে যুক্ত হন। ইউরোপে পাঁচ বছর থাকাকালে পৃথিবীর বিভিন্ন মিউজিয়ামে রক্ষিত তথ্যাদি থেকে ভারতীয় শিল্পশাস্ত্রের এক বিরাট সাহিত্যের অনুবাদ, সম্পাদন, সংযোজন ও প্ৰকাশ করেন। ‘প্ৰাচীন ভারতীয় স্থপতিবিদ্যার অভিধান’ গ্ৰন্থ রচনার জন্য লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিলিট উপাধি পান। তাঁর অমরকীর্তি প্রাচীন ভারতীয় হিন্দু স্থাপত্য ‘মনসর’ শিল্প শাস্ত্রের পুনরুদ্ধার ও ৬০০০ পৃষ্ঠায় ৭ খণ্ডে তা প্ৰকাশ করা। এ ছাড়া তিনি ‘Summary of Mansara’, ‘Elements of Hindu Culture and Sanskrit Civilisation’, ‘Glories of India’, ‘চৈতন্যযুগের পরিস্থিতি ও ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়’ প্রভৃতি গ্ৰন্থ ও বহু প্ৰবন্ধ রচনা করেন। ১৯১৭ খ্ৰী. হল্যান্ডের লীডন বিশ্ববিদ্যালয় তাকে পি-এইচ-ডি উপাধি দান করে। কর্মজীবন শুরু-হরিদ্বারের ঋষিকুল কলেজের অধ্যক্ষরূপে। পরে মাদ্রাজের শিক্ষাবিভাগীয় অধিকর্তার সেক্রেটারী, তারপর রাজ্যপালের সেক্রেটারী পদে নিযুক্ত হন। ভারত সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগেও উচ্চপদে কিছুদিন ছিলেন। পরে ক্রমে পাটনায় সরকারী সংস্কৃত কলেজের ও এলাহাবাদের মুর সেন্ট্রাল কলেজের সংস্কৃতের অধ্যাপক, ১৯২৩ – মে ১৯৫০ খ্ৰী. পর্যন্ত এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত সাহিত্যের অধ্যাপক এবং প্ৰাচ্য-সম্বন্ধীয় বিভাগীয় প্রধানরূপে কাজ করেন। এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য ও বহু বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অধ্যাপনাকালে তিনি মাসিক অর্জিত বেতন দুই হাজার টাকার দশ শতাংশ দরিদ্র ছাত্রদের শিক্ষার্থে দান করতেন।
পূর্ববর্তী:
« প্ৰশান্তচন্দ্ৰ মহলানবীশ
« প্ৰশান্তচন্দ্ৰ মহলানবীশ
পরবর্তী:
প্ৰসন্নকুমার চট্টোপাধ্যায় »
প্ৰসন্নকুমার চট্টোপাধ্যায় »
Leave a Reply