প্ৰশান্তচন্দ্ৰ মহলানবীশ (২৯-৬-১৮৯৩ – ২৮-৬-১৯৭২) কলিকাতা। প্ৰবোধচন্দ্ৰ। প্ৰসিদ্ধ পরিসংখ্যানবিদ। প্রেসিডেন্সী কলেজ ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষালাভ করেন। কেমব্রিজ থেকে গণিত ও পদার্থবিদ্যায় প্রথম শ্রেণীর অনার্সসহ ট্রাইপস পেয়ে ইন্ডিয়ান এড়ুকেশনাল সার্ভিসে যোগদান করেন ও কলিকাতা প্রেসিডেন্সী কলেজে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক নিযুক্ত হন। এই কলেজের সঙ্গে তিনি দীর্ঘকাল অধ্যাপকরূপে, কিছুকাল অধ্যক্ষরূপে এবং (অবসর-গ্রহণের পরে) এমিরিটাস প্রফেসররূপে যুক্ত ছিলেন। পদার্থবিদ্যার অধ্যাপকরূপে বিশেষ সুনাম অর্জন করেন। পদার্থবিদ্যা ছাড়াও নানা বিষয়ে তাঁর অনুসন্ধিৎসা প্রসারিত ছিল। নৃতত্ত্ব-সম্পর্কিত গবেষণায় তিনি বিশেষ পারদর্শিতাঁর পরিচয় দেন। এই বিষয়ে তাঁর উল্লেখযোগ্য নিবন্ধ ‘The Statistical Analysis of Anglo-Indian Stature’ (১৯২২), ‘Analysis of Race Mixture in Bengal’। তাঁর গবেষণালব্ধ আবিষ্কার ‘মহলানবীশ ডিসট্যান্স’ নামে পরিচিত। আবহাওয়া-তত্ত্বেও তাঁর দান স্মরণীয় এবং এ বিষয়ে তিনি একাধিক গবেষণামূলক প্ৰবন্ধ রচনা করেন। ১৯২২ খ্রী. বঙ্গীয় সরকারের আমন্ত্রণে এদেশের বন্যার উৎপত্তি সম্পর্কে তাঁর গবেষণা ফলপ্ৰসূ হয়। ওড়িশার হীরাকুদ বাধ নির্মাণে তাঁর পরিচয় পাওয়া যায়। এসব কৃতিত্ব সত্ত্বেও পরিসংখ্যান-বিজ্ঞান গবেষণার জন্যই তিনি বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জন করেন। এ বিষয়ের আলোচনায় তিনি এ দেশে পথিকৃৎ। তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ কীর্তি ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিকল ইনস্টিটিউট-এর প্রতিষ্ঠা। তিনি রয়্যাল সোসাইটির ফেলো (F.R.S.) নির্বাচিত হন। বহুবার বহুস্থানে আমন্ত্রিত হয়ে বিদ্বজনসভায় অংশগ্রহণ করেছেন এবং ভারত সরকারের উপদেষ্টার কাজ করেছেন। দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার কাঠামো তিনিই রচনা করেন। প্রধানতঃ বৈজ্ঞানিক হলেও সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে তাঁর প্রগাঢ় অনুরাগ ছিল। রবীন্দ্রনাথের অন্তরঙ্গ সহচরদের অন্যতম এবং ১৯২১ – ৩১ খ্রী. শান্তিনিকেতনের কর্মসচিব ছিলেন।
পূর্ববর্তী:
« প্ৰশান্তকুমার সেন
« প্ৰশান্তকুমার সেন
পরবর্তী:
প্ৰসন্নকুমার আচাৰ্য, মহামহোপাধ্যায় »
প্ৰসন্নকুমার আচাৰ্য, মহামহোপাধ্যায় »
Leave a Reply