প্রমথনাথ বসু (১২-৫-১৮৫৫ – ২৭-৪-১৯৩৫) গৈপুর-চব্বিশ পরগনা। তারাপ্ৰসন্ন। প্ৰখ্যাত ভূতত্ত্ববিদ। কৃষ্ণনগর কলেজ থেকে এস্ট্রান্স ও ১৮৭৩ খ্রী এফ.এ. পাশ করে কলিকাতা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়বার সময় গিলক্রাইস্ট বৃত্তি পেয়ে ১৮৭৪ খ্রী লন্ডন যান। ১৮৭৮ খ্রী. লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক এবং ১৮৭৯ খ্রী. রয়্যাল স্কুল অফ মাইনস-এর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। দেশে ফিরে ১৮৮০ খ্রী জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়াতে চাকরি পেলেও বিলাতে রাজনৈতিক কার্যকলাপের জন্য ডেপুটি সুপারের বেশী পদোন্নতি হয় নি। ১৯০৩ খ্রী. তাঁর নিম্নস্থ জনৈক ইংরেজকে সুপার পদ দিলে তিন পদত্যাগ করেন। চাকরি জীবনে তিনি মধ্যপ্রদেশের ধুল্পী ও রাজাহারা লৌহখনি আবিষ্কার করেন; তাঁরই ফলে ভিলাই কারখানা স্থাপন সম্ভব হয়েছে। ১৯০১ খ্রী. তিনি প্রেসিডেন্সী কলেজের ভূবিদ্যার অধ্যাপক ছিলেন। তাঁর কর্মজীবনের বিশিষ্ট কীর্তি—ময়ুরভঞ্জ রাজ্যের গুরুমহিষানি অঞ্চলে লৌহখনির আবিষ্কার (১৯০৩–০৪) এবং সেই ভিত্তিতে জামশেদজী টাটাকে লৌহ-ইস্পাত কারখানা স্থাপনে রাজী করান। এ ছাড়া রাণীগঞ্জ, দাৰ্জিলিং ও আসামে কয়লা, সিকিমে তামা এবং ব্ৰহ্মদেশেও খনিজ বস্তুর অনুসন্ধান করেছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে বিলাতে ও ভারতে প্ৰথম শ্রেণীর নেতাদের বুদ্ধি ও সাহস যুগিয়েছেন। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে যোগদান করেন। রাজনীতিক্ষেত্রে গঠনমূলক কাজে অগ্ৰণী ছিলেন। বিলাতে ইন্ডিয়া সোসাইটির কর্মসচিব এবং জাতীয় শিক্ষা পরিষদ স্থাপিত হলে বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের (আজকের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়) প্ৰথম অধ্যক্ষ ও পরে পরিদর্শক হন। এসব প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি হওয়ার অনেক পূর্বেই ১৮৮৭/৮৮ খ্রী. এ ব্যাপারে বক্তৃতা দেন, প্ৰবন্ধাদি লেখেন এবং ভারতীয় শিল্প-বাণিজ্য বিস্তারের জন্য বহু চেষ্টা করেন। বাঙলায় বিজ্ঞান-প্রচারে অগ্ৰণী ছিলেন; ‘প্ৰাকৃতিক ইতিহাস’ তাঁর বিশিষ্ট রচনা। পাঠ্যপুস্তকের বিষয়-নির্বাচনে সহযোগিতার জন্য তিনি বেঙ্গল অ্যাকাডেমী অফ লিটারেচার’ স্থাপন করেন। এটি পরে সাহিত্য পরিষদের সঙ্গে সংযুক্ত হয়। এশিয়াটিক সোসাইটির সভ্য ছিলেন। রচিত গ্রন্থ: ‘A History of Hindu Civilization Under British Rule’ (3 Vols.), ‘Epochs of Civilization’, ‘Swara-Cultural and Political’। কলিকাতায় তাঁর পত্নী কমলা দেবীর নামাঙ্কিত একটি স্কুল আছে।
পূর্ববর্তী:
« প্রমথনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
« প্রমথনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
পরবর্তী:
প্রমথনাথ বিশী »
প্রমথনাথ বিশী »
Leave a Reply