প্ৰবোধচন্দ্ৰ বাগচী (১৮-১১-১৮৯৮ – ১৯-১-১৯৫৬) শ্ৰীকোল-যশোহর। পৈতৃক বাসস্থান খুলনা। ১৯১৪ খ্ৰী. মাগুরা হাই স্কুল থেকে প্রবেশিকা, ১৯১৮ খ্রী. কৃষ্ণনগর কলেজ থেকে সংস্কৃত সাহিত্যে অনার্সসহ বি.এ. এবং ১৯২০ খ্ৰী. প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে এম.এ. পাশ করে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃত বিভাগের লেকচারার হন। ১৯২১ খ্ৰী. স্যার, আশুতোষ তাকে বিশ্বভারতী বিদ্যালয়ে পাঠালে তিনি সেখানে সিলভ্যা লেভির শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। অধ্যাপক লেভির আগ্রহে তিনি ১৯২২ খ্রী. নেপাল গিয়ে নেপাল দরবারের গ্রন্থাগারে রক্ষিত বৌদ্ধধর্ম ও সংস্কৃতি-বিষয়ক পাণ্ডুলিপি নিয়ে কাজ করেন। এই সময় স্যার রাসবিহারী ঘোষ ট্র্যাভেলিং ফেলো হিসাবে জাপান ও ইন্দোচীন থেকে বৌদ্ধধর্ম ও সংস্কৃতি বিষয়ে উপাদান সংগ্রহ করেন। ১৯২৩ খ্রী. প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করতে যান। ১৯২৩ – ২৬ খ্রী. ভোট ও চীনা ভাষা এবং বৌদ্ধধর্ম ও শাস্ত্ৰ অধ্যয়ন করে প্রাচীন ভারতের ইতিহাস বিষয়ে গবেষণা করেন। এই গবেষণার ফল-ফরাসী ভাষায় তিন খণ্ডে রচিত ‘চীনদেশে বৌদ্ধশাস্ত্ৰ (Le Canon Bouddhique En Chine)’ এবং দুখণ্ডে দুইখানি সংস্কৃত-চীনা অভিধান’ (Deux, Lexiques Sanskrit-Chinois) গ্রন্থ। এই গ্রন্থ দুটির জন্য প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে Docteur-e-Letters ডিগ্ৰী পান। ১৯২৬ খ্রী. দেশে ফিরে দোহাকোষ, চর্যাপদ ইত্যাদি সংগ্রহের জন্য দ্বিতীয়বার নেপালে যান। এরপর ১৯৩০ — ৪৪ খ্ৰী. পর্যন্ত কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা ও গবেষণার কাজে রত থাকেন। এই সময়ে তাঁর রচিত গ্ৰন্থ ও প্ৰবন্ধাবলীর মধ্যে ‘দোহাকোষের ব্যাখ্যা ও অনুবাদ’, ‘চর্যাপদের মূল পাঠ S-Jiry’, ‘Studies in the Tantras’, ইত্যাদি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ১৯৪৪ খ্রী. থেকে নিজ চেষ্টায় ‘Sino-Indian Studies’ নামে চীন-ভারত সংস্কৃতি-বিষয়ক ত্রৈমাসিক গবেষণা-পত্রিকা সম্পাদনা ও প্ৰকাশ করতে থাকেন। ১৯৪৫ খ্রী. বিশ্বভারতীর চীনাভবনে গবেষণা বিভাগের অধ্যক্ষ হিসাবে যোগ দেন। ১৯৪৭ খ্রী. পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে অধ্যাপকরূপে চীনদেশে যান। ১৯৪৮-৫১ খ্রী. মধ্যে বিশ্বভারতীর প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যক্ষ এবং পরে বিদ্যাভবন গবেষণা বিভাগের অধ্যক্ষ হন। বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়রূপে পরিগণিত হলে তিনি ইতিহাসের অধ্যাপক এবং স্নাতকোত্তর বিভাগের অধ্যক্ষ হন। ১৯৫২ খ্রী. বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিতের নেতৃত্বে ভারতীয় সংস্কৃতি সঙ্ঘের সদস্যরূপে পুনরায় চীনদেশে যান। ১৯৫৪ খ্রী. বিশ্বভারতীর উপাচার্য হন। কর্মরত অবস্থায় হৃদরোগে তাঁর মৃত্যু হয়।
পূর্ববর্তী:
« প্ৰবোধচন্দ্ৰ পাল
« প্ৰবোধচন্দ্ৰ পাল
পরবর্তী:
প্ৰভা »
প্ৰভা »
Leave a Reply