প্রতিভা গঙ্গোপাধ্যায় (এপ্রিল ১৯১৭ – ২৭-৪-১৯৪৯) ফরিদপুর। বিহারের চাইবাসায় জন্ম। অতুলচন্দ্ৰ বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রামে দারিদ্র্য ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সংগ্ৰাম করে কিছুটা লেখাপড়া শেখেন। কৈশোরে চুড়াতে বিপ্লবী দুই কাকা প্ৰাণতোষ ও পরিতোষ চট্টোপাধ্যায়ের সংস্পর্শে এসে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। ১৭ বছর বয়সে পাবনা জেলার এক অজ গ্রামে ব্ৰজেন্দ্রনাথ গাঙ্গুলীর সঙ্গে বিবাহ হয়। ভাসুর সমাজসেবী হরেন্দ্রনাথের উৎসাহে গ্রামে একটি বালিকা বিদ্যালয় গড়ে তোলেন। ১৯৩৯ খ্রী. প্ৰাইভেটে ম্যাট্রিক পাশ করে চুঁচুড়া বুড়াশিবতলায় ভারতী বিদ্যাভবনে প্রধান-শিক্ষিকার পদ পেয়ে শিশুপুত্রকে নিয়ে সেখানে আসেন। এখানে শিক্ষকতার সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতিচর্চা ও মহিলা সংগঠনের কাজ চালাতে থাকেন। ১৯৪০ খ্ৰী. কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ পান। হুগলী জেলার কৃষক আন্দোলনে কৃষক মেয়েদের সংগঠিত করেন। এ সময় ভারত রক্ষা আইনে কিছুদিন আটক থাকেন। ১৯৪৪ খ্রী. পার্টি বৈধ ঘোষিত হলে প্ৰকাশ্যভাবে পার্টির ও মহিলা সমিতির কাজ করেন। পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী হিসাবে হুগলী জেলায় ‘মহিলা আত্মরক্ষা সমিতির শক্তিশালী। কেন্দ্র গড়ে তোলেন। চব্বিশ পরগনা জেলার মহিলাদেরও সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেন। জীবিকার জন্য গৃহশিক্ষকতা, পত্রিকার কাজ ও পত্রিকায় লেখা প্ৰকাশ করতেন। এই সময় সিটি কলেজে বাংলায় অনার্স নিয়ে বি-এ, ক্লাশে ভর্তি হন ও তালতলা স্কুলে শিক্ষিকার কাজ পান। রেডিয়োতে বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশগ্ৰহণ করেছেন। ১৯৪৮ খ্রী. কৃষক আন্দোলনে জোতদারকে ধান না দেবার সংগ্রামে ডোঙ্গাজোড়ায় মেয়েদের সংগঠনের দায়িত্বে ছিলেন। ফেব্ৰু ১৯৪৯ খ্রী. ড়ুবিরভেড়ী গ্রামের আন্দোলনে অনেক কৃষক রমণী শহীদ হন। এই সময়ে ব্যাপক ধরপাকড়ে বহু কমিউনিস্ট কারারুদ্ধ হন। জেলে অত্যাচারের বিরুদ্ধে, রাজনৈতিক বন্দীর মর্যাদার দাবিতে তারা জেলের ভিতর সংগ্রাম শুরু করলে তাদের সমর্থনে বিভিন্ন সংগঠন থেকে একএকদিন প্রতিবাদ মিছিল বার করা হয়। ২৭শে এপ্রিল মহিলাদের প্রতিবাদ মিছিলের উপর পুলিসের গুলি চললে লতিকা সেন, অমিয়া দত্ত ও গীতা সরকারের সঙ্গে তিনিও নিহত হন।
পূর্ববর্তী:
« প্রতাপাদিত্য
« প্রতাপাদিত্য
পরবর্তী:
প্রতিমা ঠাকুর »
প্রতিমা ঠাকুর »
Leave a Reply