পুলিনবিহারী সেন (১১-৮-১৯০৮ – ১৪-১০-১৯৮৪) ময়মনসিংহ। ব্ৰাহ্ম পরিবারে জন্ম। দেশকমী ও দরিদ্র-বান্ধব চিকিৎসক বিপিনবিহারী। খ্যাতনামা রবীন্দ্ৰবিশারদ। ময়মনসিংহ জাতীয় বিদ্যালয়ে শিক্ষা শুরু। ১৯২৫ খ্রী. শান্তিনিকেতন আশ্রম বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। শান্তিনিকেতন থেকে আইএ, স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বি-এ এবং কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এম.এ. পাশ করেন। ১৯৩৫ খ্রী. ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় কর্মজীবন শুরু। ১৯৩৯ খ্রী. তিনি বিশ্বভারতী গ্ৰন্থন বিভাগে যোগ দেন। শান্তিনিকেতনে ছাত্রজীবনেই তিনি রবীন্দ্রনাথের ভাষণ অনুলিখনে দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। সেই অভিজ্ঞতা পরবর্তীকালে বিশ্বভারতীর গ্রন্থনবিভাগে রবীন্দ্র-রচনা সম্পাদনার কাজে অনেকাংশে সহায়তা করে। বিস্মৃতপ্ৰায় রবীন্দ্র-রচনার সন্ধানে তিনি বিস্তারিত আকারে বাংলা ও ইংরেজী রবীন্দ্র-রচনা-পঞ্জী সংকলনে ব্ৰতী হন। শুধু তা-ই নয়, রবীন্দ্র রচনাবলীতে গ্ৰন্থ-পরিচয়, রবীন্দ্ৰ সাহিত্য সম্বন্ধে যে তথ্য বিন্যাসের সূচনা, রবীন্দ্র-রচনা-পঞ্জীতে তা তিনি বিস্তারিত আকারে বিবৃত করেন। ১৯৫৭ খ্ৰী বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগের অধ্যক্ষ হন। এখানে তাঁর রবীন্দ্র গ্রন্থের পাঠান্তর সংবলিত গ্ৰন্থ-প্ৰকাশ প্রকাশন জগতে একটি নূতন পদপ্রদর্শক হিসাবে চিহ্নিত। রবীন্দ্রনাথের চিঠিপত্র (ষষ্ঠ-নবম খণ্ড) সঙ্কলন ও সম্পাদনাও করেছেন। ১৯৬০ খ্রী. বিশ্বভারতী থেকে পদত্যাগ করলেও ১৯৬৭ খ্রী. পুনরায় রবীন্দ্র-চৰ্চা-প্রকল্পের অধ্যক্ষ হিসাবে যোগ দেন। বহু রবীন্দ্রগ্রন্থের গ্রন্থ পরিচয়, পাঠ-ভেদ নির্ণয় ছাড়াও সম্পাদনা করেছেন ‘রবীন্দ্ৰায়ণ’ ১ম ও ২য় খণ্ড, রবীন্দ্ৰ শতবর্ষপূর্তি উৎসবের সময় রবীন্দ্র প্রসঙ্গে কয়েকটি গ্ৰন্থ ও পত্রিকা, ‘অবনীন্দ্রনাথ ও গগনেন্দ্রনাথ’ সংখ্যার মত বই, জগদীশচন্দ্র বসুর অব্যক্ত, প্রমথ চৌধুরীর সনেট পঞ্চাশৎ ও অন্যান্য কবিতা প্রভৃতি। কয়েক বছর বিশ্বভারতী পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। ‘রবীন্দ্ৰ গ্ৰন্থপঞ্জী (১৯৭৪) তাঁর জীবনের বিশেষ উল্লেখযোগ্য কর্ম। অনুপুঙ্খবহুল তথ্যনিবিড় সুপরিকল্পিত এক গবেষণা গ্ৰন্থ হয়ে উঠেছে এটি। ১৯৬১২ খ্রী. রবীন্দ্ৰ শতবর্ষে তিনি রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন। দিল্লী সাহিত্য একাডেমি তাকে বিশেষ রবীন্দ্র পুরস্কার দেয়। এ ছাড়াও নানা পুরস্কার ও কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সরোজিনী বসু স্বর্ণপদক পেয়েছেন।
পূর্ববর্তী:
« পুলিনবিহারী সরকার
« পুলিনবিহারী সরকার
পরবর্তী:
পুষ্প দেবী »
পুষ্প দেবী »
Leave a Reply