পুলিনবিহারী দাস (২৪-১-১৮৭৭ – ১৭-৮-১৯৪৯) লোনসিং-ফরিদপুর। নবকুমার। ১৮৯৪ খ্রী. ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাশ করেন। বি-এ পড়বার সময় ঢাকা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবরেটরীতে অ্যাসিস্ট্যান্ট ও পরে ডেমনষ্ট্রেটর হন। কলিকাতার সরলাদেবীর আখড়ার অনুকরণে ১৯০৩ খ্ৰী. নাগাদ তিনি টিকাটুলীতে একটি আখড়া স্থাপন করেন। ১৯০৫ খ্রী. ঢাকায় শ্ৰীরামপুরের বিখ্যাত লাঠিয়াল ওস্তাদ মুর্তজা সাহেবের কাছে ছোট লাঠি ও তরবারি খেলা শেখেন। ১৯০৬ খ্রী. পি মিত্রের কাছে বিপ্লবী মন্ত্রে দীক্ষিত হন এবং ঢাকায় অনুশীলন সমিতি সংগঠিত করে লাঠি খেলা, ছোরা খেলা, কুচকাওয়াজ ও কৃত্রিম যুদ্ধের মাধ্যমে তরুণদের উৎসাহিত করে তোলেন। ১৯০৭ খ্রী. থেকে ১৯১০ খ্ৰী. পর্যন্ত অনুশীলন দলের সর্বাধিনায়কের দায়িত্ব বহন করেন। তাঁর নেতৃত্বে পূর্ব ও উত্তরবঙ্গের এবং বাংলার বাইরেও সমিতির শাখা বিস্তার লাভ করেছিল। ১৯০৮ খ্ৰী. যখন অনুশীলন সমিতি সহ বিভিন্ন সমিতি বেআইনি ঘোষিত হয় তখন তাঁর নেতৃত্বে সমিতির প্রায় ৬০০ শাখা বিদ্যমান ছিল। বৃটিশ সরকার ১৮১৮ খ্ৰী. ৩ নম্বর রেগুলেশনে তাঁকে আটক করে মন্টগোমারী জেলে রাখেন। ১৯১০ খ্রী. মুক্ত হন। ১৯১২ খ্রী. রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র মামলায় দণ্ডিত হয়ে ৭ বৎসরের জন্য আন্দামানে প্রেরিত হন। ১৯২০ খ্রী. মহাত্মা গান্ধীর অহিংস নীতির বিরুদ্ধে সশস্ত্ৰ বিপ্লবের আদর্শ প্রচারের উদ্দেশ্যে ভারতসেবক সঙ্ঘ গঠন করেন। ১৯২২ খ্রী. ভারতসেবক সঙ্ঘ ভেঙ্গে দিয়ে ব্যবহারিক রাজনীতি থেকে অবসর নেন। ১৯২৫ খ্রী. কলিকাতা বিদ্যাসাগর স্ট্রীটে বঙ্গীয় ব্যায়াম সমিতি ও আখড়া স্থাপন করে লাঠি, ছোরা প্রভৃতির খেলা শেখাতে থাকেন। এইসব খেলার বৈজ্ঞানিক শিক্ষাপদ্ধতি-সম্বন্ধীয় পুস্তকও রচনা করেন। অন্যান্য কয়েকটি আখড়াতেও ঐসব খেলা শেখাতেন। ব্যায়াম সমিতির মাঠেই অকস্মাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি একটি আত্মজীবনী লিখেছিলেন।
পূর্ববর্তী:
« পুলিনচন্দ্ৰ ঘোষ
« পুলিনচন্দ্ৰ ঘোষ
পরবর্তী:
পুলিনবিহারী সরকার »
পুলিনবিহারী সরকার »
Leave a Reply