নীরেন্দ্ৰনাথ রায় (১৮৯৬–২৯-১০-১৯৬৬)। পৈতৃক নিবাস-যশোহর। রাজা প্রতাপাদিত্যের খুল্লতাত-বংশীয়। মাতা নিস্তারিণী দেবী ছিলেন প্রথম যুগের দেশকমী। এমএ পাশ করে স্কটিশ চার্চ কলেজে অধ্যাপনার কাজ পেলেও ধুতি ছেড়ে কোট প্যান্ট পরে যাবার শর্ত শুনে চাকরি ত্যাগ করেন। পরিবর্তে বঙ্গবাসী কলেজে চাকরি নেন। বিজ্ঞানী সত্যেন বসুর সঙ্গে পরিচিত হয়ে মানিকতলা অবৈতনিক শ্রমজীবি নৈশ বিদ্যালয়ে কিছুদিন পড়ান। ১৯৬৪ খ্রী. বঙ্গবাসী কলেজের অধ্যাপনা থেকে অবসর নেন। অধ্যাপকরূপে তাঁর খ্যাতি ছিল শেস্কপীয়র পড়ানোর জন্য। ফরাসী, জার্মান ও রুশ ভাষাও জানতেন। চরকা কাটা ও গান্ধীবাদে বিশ্বাসী হন। পরে সুহৃদ ও সহপাঠী নেতাজী সুভাষচন্দ্রের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। জীবনের তৃতীয় অধ্যায়ে শ্ৰীঅরবিন্দের ভক্ত হন। (১৯২৮ – ৩০)।
শেষজীবনে মার্ক্সবাদে বিশ্বাসী হয়ে কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। ১৯৪৮ – ৪৯ খ্রী. পার্টির সঙ্গে মতদ্বৈধ হলেও মার্ক্সবাদে বিশ্বাস হারান নি। রুশ দেশে গিয়ে মস্কোয় ২ বছর রুশভাষা থেকে বঙ্গানুবাদের কাজ করেন। পরে বাংলা ভাষার অধ্যাপক হয়েছিলেন। জুন ১৯৬৬ খ্রী। তিনি দিল্লীর ইনস্টিটিউট অফ রাশিয়ান কালচার’ নামক প্রতিষ্ঠানের অধ্যাপক হয়ে আসেন, কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই মারা যান। ‘পরিচয়’ পত্রিকার। অন্যতম প্ৰতিষ্ঠাতা। ‘সাহিত্যৰীক্ষা’ তার প্রবন্ধ সংকলন। ‘মার্চেন্ট অফ ভেনিস ও ম্যাকবেথ’ গ্ৰন্থদ্বয়ের নাট্যানুবাদ। করেন। কলিকাতায় ‘শেক্সপীয়র পরিষদ স্থাপন করে বাংলা ভাষায় শেক্সপীয়রের নাটক মঞ্চস্থকরণে উদ্যোগী হন। ‘শেক্সপীয়র; হিজ, অডিয়েন্স অ্যান্ড হিজ। রীডার্স (১৯৬৫) তার উল্লেখযোগ্য রচনা। সত্যেন বসু প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞান পরিষদের গৃহনির্মাণে ৪৫ হাজার টাকা দান করেন।
Leave a Reply