নারায়ণ রায়, ডাঃ (১৯০০ – ১-১১-১৯৭৩) কলিকাতা। ডাক্তার ক্ষেত্ৰনাথ। কলিকাতা মেডিক্যাল কলেজের মেধাবী ছাত্র, সমাজসেবী, চিকিৎসক ও প্ৰখ্যাত কমিউনিস্ট নেতা। ত্ৰিশের দশকে আন্দামান জেলে ‘কমিউনিস্ট সংহতি’ গড়ে তোলার প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন। বিপ্লবী দলের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এবং ডালহৌসী স্কোয়ার ও ক্যালকাটা বোমা কেসে তিনি ১৯৩০ খ্রী. যাবজীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। সেই সময় তিনি কলিকাতা কর্পোরেশনের সর্বকনিষ্ঠ কাউন্সিলার ছিলেন। আলীপুর জেলে দুই বছর থাকাকালে তিনি কালী সেনের সংস্পর্শে এসে মার্ক্সবাদে দীক্ষিত হন এবং এ বিষয়ে গভীর পড়াশুনা করেন। ১৯৩৩ খ্রী. আন্দামানের সেলুলার জেলে গিয়ে তিনি সেখানে ‘পাঠচক্র’ চালাতে থাকেন। পশ্চিমবঙ্গের কমিউনিস্ট নেতাদের অনেকেই এই পাঠচক্র থেকে প্রথম পাঠ নিয়েছিলেন। সেখানে থাকাকালে তিনি আলীপুর জেলে বন্দী আবদুল হালিম এবং সরোজ মুখার্জির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে ‘কমিউনিস্ট সংহতি’ গড়ে তোলেন। এ কাজে নিরঞ্জন সেন, সতীশ পাকড়াশী ও অন্যান্যরা সহযোগী ছিলেন। ১৯৩৮ খ্ৰী বন্দীমুক্তি আন্দোলনের চাপে সরকার তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। ১৯৩৯ খ্রী. আন্দামান থেকে ফিরে প্রকাশ্যে কমিউনিস্ট আন্দোলনে নামেন। পার্টি সে সময়ে বেআইনী ঘোষিত ছিল। চিকিৎসক হিসাবেও তিনি খ্যাতিমান হয়েছিলেন এবং বিনা পারিশ্রমিকে চিকিৎসা করে দরিদ্রজনের গভীর ভালবাসা ও সম্মান-সমাদর লাভ করেন। ১৯৫২ থেকে ১৯৬৮ খ্রী. পর্যন্ত তিনি উত্তর কলিকাতার বিদ্যাসাগর কেন্দ্র থেকে বিধানসভার নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। ১৯৬৯ খ্রী. নির্বাচনে তিনি আর প্ৰতিদ্বন্দ্বিতা করেন নি। তখন থেকে কেবল চিকিৎসা ও জনসেবামূলক কাজে আত্মনিয়োগ করেন। ভারতীয় রেডক্রশ সোসাইটির আজীবন সদস্য ও জনহিতকর বহু সংস্থার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৬২ খ্রী. ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি দ্বিধাবিভক্ত হলে তিনি মার্ক্সবাদী কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত থাকেন।
পূর্ববর্তী:
« নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়
« নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়
পরবর্তী:
নারায়ণ সান্যাল »
নারায়ণ সান্যাল »
Leave a Reply