নলিনীকান্ত ভট্টশালী (২৪-১-১৮৮৮ – ৬-২-১৯৪৭) পাইকপাড়া—বিক্রমপুর, ঢাকা। রোহিণীকান্ত। খ্যাতনামা প্রত্নতত্ত্ববিদ ও ইতিহাসবিদ। বাল্যে পিতৃহীন হলে খুল্লতাত অক্ষয়চন্দ্র কর্তৃক প্রতিপালিত হন। প্রবেশিকা পরীক্ষায় (১৯০৫) পদক ও বৃত্তিলাভ করেন। ছাত্রাবস্থায় পিতৃব্যের ব্যয়ভার লাঘবের জন্য কবিতা ও গল্প লিখে উপার্জনের চেষ্টা করতেন। কলেজে কয়েকজন ইংরেজ অধ্যাপকের কাছেও আর্থিক সাহায্য পান।
১৯১২ খ্রী. এম.এ. পাশ করেন। কিছুদিন স্কুল-কলেজে শিক্ষকতার পর ১৯১৪ খ্রী. ঢাকা মিউজিয়ামের কিউরেটর পদে নিযুক্ত হন ও আজীবন ঐ পদে থেকে মিউজিয়ামের প্রভূত উন্নতিসাধন করেন। রাজা দনুজমর্দন ও মহেন্দ্রদেবের পরিচয়-নির্ধারণ তাঁর যুগান্তরকারী আবিষ্কার। মুদ্রাতত্ত্ব ও প্রত্নলিপিবিদ্যায় এবং মৌর্য ও গুপ্তবংশীয় ইতিহাসের গবেষণায় তার ভারতজোড়া খ্যাতি হয়েছিল। ‘ক্রোনোলজি অফ আর্লি ইন্ডিপেন্ডেন্ট সুলতানস অফ বেঙ্গল’ গ্ৰন্থ রচনা করে তিনি ১৯২২ খ্রী. কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গ্রিফিথ পুরস্কার’ পান। এই গ্রন্থে তিনি রাজা গণেশের সম্বন্ধে অনেক নূতন তথ্য প্রকাশ করেন। ১৯৩৪ খ্রী. মুদ্রাতত্ত্ব ও গবেষণার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি-এইচডি উপাধি পান। এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য গ্ৰন্থ : ‘Iconography of Brahmanical and Buddhist Sculpture in the Dacca Museum’। গল্প-সংকলন ‘হাসি ও অশ্রু’ (১৯২৫) তার প্রথম প্ৰকাশিত গ্ৰন্থ। রচিত ‘নিঃসঙ্গ’ ও ‘পূর্বরাগ’ গল্প দুটি অনুদিত হয়ে জার্মান-সঙ্কলনে স্থানলাভ করেছে। বিদ্যালয়ের প্রায় ৪০টি পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন। ‘বীর বিক্ৰম’ নামে একখানি নাটকও লিখেছেন। সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা ৪ টি।
Leave a Reply