নলিনীকান্ত গুপ্ত (১৩.১.১৮৮৯ – ৭.২.১৯৮৪) ফরিদপুর। রজনীকান্ত। উকিল পিতার কর্মক্ষেত্র রংপুরের নীলফমারীতে স্কুলের শিক্ষা। ১৯০৪ খ্ৰী. কলিকাতা প্রেসিডেন্সী কলেজে এসে ভর্তি হন। বৈপ্লবিক গুপ্ত সমিতির সংস্পর্শে এসে ১৯০৭ খ্রী. কলেজের পড়া ছেড়ে তিনি বারীন্দ্রকুমার ঘোষের মানিকতলা বোমা তৈরি কেন্দ্ৰে সক্রিয়ভাবে যোগ দেন। আলীপুর বোমা মামলায় ২-৫-১৯০৮ খ্রী. গ্রেপ্তার হয়ে প্রমাণাভাবে এক বছর পর ছাড়া পান। এই সময় জেলে শ্ৰীঅরবিন্দের সান্নিধ্য লাভ করে তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হন। আলীপুর জেল থেকে মুক্ত হয়ে শ্ৰীঅরবিন্দ পরিচালিত ‘ধর্ম’ ও ‘কর্মযোগিনী’ (ইং) পত্রিকার কার্যালয়ে কাজ করার সময়ই শ্ৰীঅরবিন্দের কাছে তার শিক্ষাদীক্ষার সূত্রপাত।
নভে ১৯০৯ খ্রী. ‘ধর্ম’ পত্রিকায় তার প্রথম প্ৰবন্ধ ‘স্বদেশী দীক্ষা’ প্ৰকাশিত হয়। শ্ৰীঅরবিন্দ পণ্ডিচেরী চলে যাবার ছয় মাস পরে মণীন্দ্রনাথ রায় ছদ্মনামে তিনিও পণ্ডিচেরী চলে যান। এখানেই শুরু হয় তার সাহিত্যরচনা ও যোগসাধনা। গ্ৰীক, লাতিন ও ফরাসী ভাষাও শিক্ষা করেন। তার রচিত গ্রন্থের ৫২টি বাংলায়, ৩৮টি ইংরেজীতে এবং ফরাসীতে ৫টি। তার সাত দশকের লেখার বিষয় হচ্ছে সাহিত্য, শিল্প, বিজ্ঞান, ধর্ম, দর্শন, যোগ, সমাজনীতি। ‘স্মৃতির পাতা’ গ্রন্থে তার প্রথম জীবনের কথা, বাংলার বিপ্লব আন্দোলন এবং আশ্রমের প্রথম পর্বের বিষয় বিবৃত করেছেন। প্রাবন্ধিক হিসাবে বিশেষ খ্যাতিমান ছিলেন। শ্ৰীঅরবিন্দের ‘সাবিত্রী’ কাব্যটি তিনি বাংলায় অনুবাদ করেছেন। ১৯২৬ খ্রী. থেকে আজীবন পণ্ডিচেরী আশ্রমের সম্পাদক ছিলেন।
Leave a Reply