নলিনীকান্ত কর (১৮৮৭ – ১৬-৯-১৯৮০) এতমান, কুমারখালি-নদীয়া। শশিভূষণ। বিপ্লবী যুগান্তর দলের বিশিষ্ট কর্মী। কিশোর বয়সেই বাঘা যতীনের সংস্পর্শে এসে বৈপ্লবিক কাজের প্রেরণায় বাড়ী ছেড়ে কলিকাতায় চলে আসেন ও স্কুলের পড়া চালান। থাকা খাওয়ার ব্যবস্থার জন্য নানান অসুবিধার সম্মুখীন হন।
১৯০৯ খ্রী. থেকে যতীন মুখার্জীর সমস্ত কাজকর্মের সঙ্গে বিশেষভাবে জড়িত হয়ে পড়েন। হাওড়া ডাকাতি কেসে যতীন মুখার্জির সাহায্যকারী থাকলেও ধরা পড়েননি। কলিকতা থাকা-কালে আত্মোন্নতি সমিতির সংস্পর্শে আসেন। যতীন মুখার্জির সঙ্গে ময়ূরভঞ্জের মহুলডিহাতে আদিবাসীদের ব্রিটিশ রাজত্বের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করার চেষ্টা করেন ও অস্ত্রশস্ত্ৰ বিলি করেন। এরপর যতীন মুখার্জী যখন জার্মান সাহায্যে প্রেরিত অস্ত্রশস্ত্রপূর্ণ ম্যাভেরিক জাহাজের প্রতীক্ষায় ৪ জন সঙ্গীসহ বালেশ্বর যান, তিনি তার সহকারী হন ও গোপাল রায় নামে কাপ্তিপদায় মণীন্দ্ৰ চক্রবর্তীর কাছ থেকে কয়েক বিঘা জমি লীজ নিয়ে কাঠের ব্যবসা করার অজুহাতে সেখানে যাতায়াত করতে থাকেন। তিনিই সে সময় যতীন মুখার্জী ও কলিকাতার নেতাদের মধ্যে যোগসূত্র হিসাবে কাজ করেন। বালেশ্বরের যুদ্ধের দিন (৯-৯-১৯১৫) ঘটনাচক্রে সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন। ডিফেন্স অব ইণ্ডিয়া অ্যাক্ট-এর আসামী–১৬-২-১৯১৬ তারিখ থেকে পলাতক থাকেন। ১৯১৭ খ্ৰীঃ যাদুগোপাল মুখার্জি, মন্মথ বিশ্বাস ও সতীশ চক্রবর্তীর সঙ্গে আসাম, বাংলা, বিহারে রাজনৈতিক প্রচার আন্দোলনে যান। বিভিন্ন বৈচিত্ৰ্যপূর্ণ ঘটনার মধ্য দিয়ে তার অজ্ঞাতবাস চলে। পরে চন্দননগরের মতিলাল রায়ের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার বিপ্লবীদের সম্বন্ধে বোঝাপড়ায় এলে অন্যান্য পলাতক বিপ্লবীদের সঙ্গে তিনিও আত্মসমর্পণ করেন ও কলিকাতা থেকে বহিষ্কৃত হন। আত্মীয় অতুলচন্দ্র ঘোষের সাহায্যে ঠিকাদারীর কাজ নিয়ে বিহারের ডেহরী অন শোনে যান ও সেখানেই আমৃত্যু বসবাস করেন।
Leave a Reply