নরেশচন্দ্ৰ মিত্র (১৮৮৮ – ২৫-৯-১৯৬৮) আগরতলা-ত্রিপুরা। বন্ধুবিহারী। ১৯০৮ খ্ৰীঃ ছাত্রাবস্থায় ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটে নবীনচন্দ্র সেন রচিত ‘কুরুক্ষেত্র’ নাটকে তিনি ‘দুর্বাসা’র ভূমিকায় অভিনয় করেন—শিশিরকুমার ছিলেন ‘অভিমন্যু’। ১৯১৪ খ্রী আইনের স্নাতক হন। কিন্তু অভিনেতার জীবনকেই শেষ পর্যন্ত বেছে নিয়েছিলেন। শিশিরকুমারের সঙ্গে বাঙলার নাট্যান্দোলনে নবযুগ প্রবর্তনে অগ্ৰণী ছিলেন। মিনার্ভা রঙ্গমঞ্চে পেশাদাররূপে যোগ দিয়ে প্ৰথম অভিনয় করেন ‘প্যালারামের স্বাদেশিকতা’ নাটকে (১৯২২)।
পরের বছর ষ্টার রঙ্গমঞ্চে অপরেশচন্দ্রের ‘কণাৰ্জ্জুন’ নাটকে ‘শকুনি’র ভূমিকায় অভিনয় করে বিখ্যাত হন। ‘চন্দ্ৰগুপ্ত’ নাটকে প্রথমে ‘চাণক্য’ পরে ‘কাত্যায়নে’র ভূমিকায় তাঁর অভিনয় বিশেষভাবে স্মরণীয়। অমধুর কণ্ঠস্বর সম্বল করে সুদীর্ঘকাল রঙ্গমঞ্চে ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। যাত্ৰাশিল্পেও যোগ দিয়ে প্ৰতিভার ছাপ রেখে যান। ৮০ বছর বয়সে মৃত্যুর তিন দিন আগে ‘সোনাই দীঘি’ ও ‘বাঙালী’ নামে দুটি যাত্রা-নাটকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করেন। মূলত খল এবং টাইপ চরিত্রে তাঁর স্বকীয়তা ছিল। তার অভিনীত ও পরিচালিত নির্বাক চিত্ৰ : ‘চন্দ্রনাথ’, ‘নৌকাড়ুবি’, ‘দেবদাস’, ‘মানভঞ্জন’ প্রভৃতি। প্রথম নির্বাক অভিনয় ‘আঁধারে আলো’ (১৯২২) চিত্রে। অনেক বিখ্যাত সবাক চিত্রের তিনি পরিচালক ও অভিনেতা। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য: ‘স্বয়ংসিদ্ধা’, ‘বাংলার মেয়ে’, ‘গোরা’, ‘অন্নপূর্ণার মন্দির’, ‘বৌঠাকুরাণীর হাঁট’, ‘উল্কা’, ‘কালিন্দী’ প্রভৃতি। পুরুলিয়ায় অনুষ্ঠিত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনের (১৯৬৭) নাট্য শাখার তিনি সভাপতি ছিলেন।
Leave a Reply