নরেন্দ্রচন্দ্র দত্ত (২৫-১১-১৮৭৮ – ১৫-৪-১৯৬২) কালীকচ্ছ—ত্রিপুরা। মহেশচন্দ্ৰ। মাত্র ন’মাস বয়সে পিতৃহীন হন। মাতার অধ্যবসায়ে দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রাম করে শিক্ষালাভ করেন। কলিকাতা রিপন (অধুনা সুরেন্দ্রনাথ) কলেজ থেকে ১৯০৫ খ্রী আইনের স্নাতক হন। কুমিল্লায় আইন ব্যবসায় শুরু করে দেওয়ানী আদালতে অল্পদিনেই প্ৰতিষ্ঠা লাভ করেন। জননেতা অখিলচন্দ্র দত্তের পরামর্শে ও ঔষধ-ব্যবসায়ী মহেশচন্দ্ৰ ভট্টাচার্যের প্রেরণায় ১৯১৪ খ্রী. কুমিল্লা ব্যাঙ্কিং কর্পোরেশনের পত্তন করেন। ঘোষিত মূলধন ৪ হাজার টাকা এবং আদায়ীকৃত মূলধন আড়াই হাজার টাকা। তার মধ্যে নিজের বাড়ি বিক্রি করে জোগাড় করেন দেড় হাজার টাকা।
প্ৰথম দিকে ব্যাঙ্ক থেকে তিনি মাইনে নিতেন মাসিক ৮ টাকা। পূর্ব ভারতের আর্থিক মূল্যায়ন (ইকনমিক সার্ভে) তিনি নিজের মত করেই করেছিলেন এবং সেখানকার প্রধান শিল্প হিসাবে অন্যতম চা-শিল্পে লগ্নী করা শুরু করেন। চা-বাগান ও আনুষঙ্গিক সম্পত্তি কেনার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ দানের ব্যবস্থা করে কুমিল্লা ব্যাঙ্কিং কর্পোরেশনের আর্থিক বনিয়াদ গড়ে তোলেন। পরে ভারতের বড় বড় ব্যাঙ্কের সঙ্গে যখন প্ৰতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হল, তখন তিনি অন্য ব্যাঙ্কের সঙ্গে মিশে ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক গঠনের সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করেন। বাঙ্গালী ব্যাঙ্কগুলি একত্র করে সুদৃঢ় ভিত্তিতে আজকের ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইণ্ডিয়া নামে চালু করার ব্যাপারে তদানীন্তন বেঙ্গল সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের প্রধান কর্ণধার জ্যোতিষচন্দ্ৰ দাসের অবদানও উল্লেখযোগ্য। ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বাঙলার অর্থনৈতিক বনিয়াদ দৃঢ় করা ও কলকারখানার সংখ্যা বাড়ানোই তার ব্যবসায়ের মূলনীতি হয়। জনসেবামূলক কাজে অর্থসাহায্য করেছেন।
Leave a Reply