নবগোপাল মিত্ৰ (১৮৪০? – ৯-২-১৮৯৪)। ১৯শ শতাব্দীর জাতীয়তাবাদের মহান কর্মী নবগোপালের সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি ‘হিন্দু মেলা’র পত্তন। এটি আগে ‘চৈত্র মেলা’ নামে পরিচিত ছিল। শরীরচর্চায়, কৃষি ও স্বদেশী পণ্যের উন্নতিবিধানে, সাহিত্য ও শিল্পের উদ্বোধনে ও সকল ক্ষেত্রে জাতিকে উন্নত করার চেষ্টায় তিনি আত্মনিয়োগ করেন। তত্ত্ববোধিনী সভার সদস্য এবং ‘ন্যাশনাল পেপার’ পত্রিকার পরিচালক ছিলেন। ‘ন্যাশনাল সোসাইটি’ গঠন তার অপর স্মরণীয় কীর্তি। এছাড়া বাঙালীর জন্য সামরিক শিক্ষার ব্যবস্থা, শাসনকার্যে ভারতীয়দের ন্যায্য অধিকার, নির্বাচন প্রথার মাধ্যমে স্বায়ত্তশাসন পরিচালনা, দেশীয় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষা প্রভৃতি বিষয়ে তিনি আন্দোলন করেছেন। বাহুবলে ইংরেজ বিতাড়নের কথা ভাবতেন।
১-৪-১৮৭২ খ্ৰীঃ ন্যাশনাল স্কুল স্থাপন এবং ব্যায়ামচৰ্চার জন্য আখড়া প্ৰতিষ্ঠা করেন। এখানে ব্যায়ামের সঙ্গে বন্দুক ছোঁড়া ও সকল প্রকার কারিগরী বিদ্যা শেখানো হত। এই আখড়ায় যারা আসতেন তাদের মধ্যে বিপিনচন্দ্ৰ পাল, জিতেন বন্দ্যোপাধ্যায়, ডা. সুন্দরীমোহন প্রভৃতির নাম উল্লেখযোগ্য। জীবনের শেষদিকে বিভিন্ন জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে হৃতসর্বস্ব হয়ে শেষ সম্পত্তি বসতবাটি বাধা দিয়ে দেশী সার্কাস দল খুলেছিলেন। সারাজীবন সব সংগঠনে ‘ন্যাশনাল’ কথাটি ব্যবহারের জন্য দেশবাসী তাকে ‘ন্যাশনাল নবগোপাল’ নামে ডাকতেন। জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল।
Leave a Reply