ননীবালা দেবী (১৮৮৮ – ১৯৬৭) বালী-হাওড়া। সূৰ্যকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। এগারো বছর বয়সে বিবাহ হয় এবং ষোল বছর বয়সে বিধবা হয়ে পিতৃগৃহে ফিরে আসেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালে ভারতে যুগান্তর দলের বিপ্লবী কর্মোদ্যোগের সময় তিনি সম্পর্কে ভ্রাতুষ্পুত্র অমরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কাছে বিপ্লবী মন্ত্রে দীক্ষা নেন।
১৯১৫ খ্রী একবার আলীপুর জেলে আবদ্ধ এক রাজবন্দীর নিকট থেকে গুপ্ত-সংবাদ আনার জন্য তিনি ঐ বন্দীর স্ত্রী সেজে পুলিসের চোখকে ফাঁকি দিয়ে সেখানে গিয়ে দেখা করেছিলেন। কখনও বা তিনি পলাতক আসামীদের নিরাপদ আশ্রয়দানের জন্য গৃহকর্ত্রীর বেশে দিন কাটিয়েছেন। পুলিসের সন্দেহ-দৃষ্টি তার ওপর পড়লে তিনি পেশোয়ারে চলে যান। সেখানে কলেরা রোগে শয্যাশায়ী অবস্থায় পুলিস তাকে গ্রেপ্তার করে কাশী জেলে নিয়ে আসে। সেখানে তার ওপর অত্যাচার চালিয়ে কথা আদায়ের চেষ্টা চলে, কিন্তু বিফল হয়ে পুলিস তাকে কলিকাতা প্রেসিডেন্সী জেলে পাঠিয়ে দেয়। এবার তিনি অনশন শুরু করেন। কি শর্তে অনশন ত্যাগ করবেন জিজ্ঞেস করলে এক দরখাস্তে তিনি লেখেন যে বাগবাজারে শ্ৰীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের পত্নীর কাছে তাকে রাখা হলে খাবেন। কিন্তু সাহেব অফিসার সেই দরখাস্ত পড়ে ছিড়ে ফেলেন। এইভাবে দরখাস্তের অপমান করায় ননীবালা সাহেবকে চড় মেরে প্ৰতিশোধ নেন। এরপর তাকে ১৮১৮ খ্ৰীষ্টাব্দের ৩নং রেগুলেশনে প্রেসিডেন্সী জেলে স্টেট প্রিজনার হিসাবে আটক রাখা হয়। বাঙলার তিনিই একমাত্র মহিলা স্টেট প্রিজনার। ২১ দিনের দিন অনশন ভঙ্গ করেন। ১৯১৯ খ্ৰী. মুক্তিলাভ করেন।
Leave a Reply