নগেন্দ্ৰকুমার গুহ রায় (১৮৮৯ – ১৯৭৩) পুকুরদিয়া-নোয়াখালী। তারিণীকুমার। পূর্ববঙ্গ ও আসামের লেফটেন্যান্ট বামফিল্ড ফুলারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করে নোয়াখালীতে এক শোভাযাত্রা পরিচালনা করায় নবম শ্রেণীর ছাত্র নগেন্দ্রনাথ স্কুল থেকে বিতাড়িত হন। কলিকাতায় এসে ‘সঞ্জীবনী’ পত্রিকার সম্পাদক কৃষ্ণকুমার মিত্রের আশ্রয়ে থেকে তিনি জাতীয় বিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ‘অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি’র একজন সক্রিয় সভ্য হয়ে ওঠেন। নোয়াখালীতে জাতীয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি সেখানে ফিরে যান এবং প্ৰবেশিকা পরীক্ষা পাশ করে শিক্ষকতা শুরু করেন। কিন্তু ছাত্রদের মধ্যে বিপ্লবের প্রেরণা দানের অপরাধে তার সে চাকরি যায়। পরে মোক্তারি পরীক্ষা পাশ করে নোয়াখালিতে মোক্তারি করতে থাকেন। তিনি প্ৰথমে অনুশীলন সমিতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে বরিশাল যুগান্তর দলের সঙ্গে তার যোগাযোগ ঘটে ও নোয়াখালীতে যুগান্তর দলের দায়িত্বভার নিয়ে কাজ করেন। ১৯১০ খ্রী. ফেরারী বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষকে নিরাপদে পণ্ডিচেরীতে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বপ্ৰাপ্ত বিপ্লবীদের মধ্যে তিনিও ছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তিন বছর জলপাইগুড়ির এক গ্রামে অন্তরীণ থাকেন। মুক্তিলাভের পর জাতীয় কংগ্রেস দলে যোগ দেন এবং অসহযোগ আন্দোলন, খিলাফৎ আন্দোলন ও আইন অমান্য আন্দোলনে সক্রিয় থাকায় বহুবার কারাবরণ করেন। ১৯৩৯ খ্রী. ফরোয়ার্ড ব্লক দলে যোগ দেন। জেলার ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি ছিলেন। শেষ জীবনে রাজনীতি থেকে অবসর-গ্ৰহণ করে কলিকাতায় বাস করেন। রচিত উল্লেখযোগ্য গ্ৰন্থ: ‘ফরাসী বীরাঙ্গনা’, ‘স্বরাজ সাধনায় বাঙালী’, ‘মহাযোগী অরবিন্দ’, ‘Life of Dr. Bidhan Chandra Roy’ প্রভৃতি। স্বাধীনতার রজত-জয়ন্তী বর্ষে (১৯৭২) ভারত সরকার তাকে তাম্ৰপত্ৰ দিয়ে সম্মানিত করেন।
পূর্ববর্তী:
« নগেন্দ্রনাথ সোম
« নগেন্দ্রনাথ সোম
পরবর্তী:
নগেন্দ্ৰনাথ ঘোষ »
নগেন্দ্ৰনাথ ঘোষ »
Leave a Reply