দ্বিজদাস দত্ত (১) (১৮৪৯ – ১৯৩৪) কালীকচ্ছ—ত্রিপুরা। রামচরণ। যৌবনে ব্ৰাহ্মসমাজের প্রভাবাধীন হয়ে পিতার অমতে ব্ৰাহ্ম কন্যা বিবাহ করেন। বি.এ. পাশ করে সরকারী বৃত্তি নিয়ে কৃষিবিদ্যা শিখতে ইংল্যান্ড যান। দেশে ফিরে উন্নত প্ৰণালীতে কৃষিকাজ করতে চেষ্টা করে অসফল হন। কলিকাতার বেথুন স্কুলে ও কুমিল্লা জেলা স্কুলে প্রধান শিক্ষকের কাজ করেন। এই সময় তার অনুকরণে কুমিল্লার ছাত্ররা বাঁশের ছাতা ও লাঠি ব্যবহার করত। কিছুদিন পরে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট-পদ লাভ করেন। হাকিমরূপে বিহারে নীলকর সাহেবদের দমনের চেষ্টা করলে বাঙলার রাজস্ব বিভাগে বদলী হন। পরে শিবপুর পূর্ত বিদ্যালয়ে অধ্যাপক-পদ পান। এইখানে কাৰ্যরত অবস্থায় তার পুত্র উল্লাসকরের বিপ্লবী কর্মের জন্য সরকার তাকে অবসর নিতে বাধ্য করে। আজীবন স্বাধীনচেতা ও স্বদেশবৎসল ছিলেন। সংস্কৃত, আরবী, ফারসী ও উর্দু ভাষায় বুৎপত্তি ছিল। ১৩১৮ ব পাট চাষ বিষয়ে উৎকৃষ্ট গ্রন্থ ‘পাট বা নালিতা’ রচনা করেন। রচিত। অন্যান্য গ্ৰন্থ : ‘শ্ৰীমৎ শঙ্করাচার্য ও শঙ্করদর্শন’ (২ খণ্ড), ‘বৈদিকধর্ম ও জাতিতত্ত্ব, ‘সর্বধর্মসমন্বয়’, ‘ইসলাম’, ‘বৈদিক সরস্বতী ও লক্ষ্মী’ প্রভৃতি। এছাড়া গীতা, বাইবেল ও কোরাণের অনুবাদ করেছিলেন।
দ্বিজদাস দত্ত (২) (১৮৮৩ – ৫-৪-১৯৪৬) ঢাকী—ময়মনসিংহ। কৃষিতত্ত্ববিদ ও শিক্ষাব্রতী। ১৯০৩ খ্রী. প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে বি.এস-সি পাশ করে শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের তদানীন্তন ‘কৃষি বিভাগে’ শিক্ষা গ্ৰহণ করেন। ১৯০৬ খ্ৰী. সরকারী বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্ণেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে এমএস-সি ডিগ্ৰী নিয়ে দেশে ফিরে চট্টগ্রাম অঞ্চলে নিজ চেষ্টায় ‘আদর্শ গো-পালন ও কৃষি গবেষণাগার’ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯১২ খ্রী. ঢাকার জগন্নাথ কলেজে। রসায়নের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। ১৯১৩ খ্রী. বঙ্গীয় কৃষি বিভাগ পুনর্গঠিত হলে তিনি তাতে যোগ দেন। পরে সরকারের ‘ইকনমিক বোটানিস্ট’ পদে কাজ করেন। বাঙলার শস্য, ডাল, জলীয় ধান, গোখাদ্য ও তুলা সম্পর্কে বহু মূল্যবান গবেষণা করে গেছেন। নেপিয়ার ঘাসের ফলন ও প্রচলন এদেশে তিনিই প্রথম করেন। দেশের শিক্ষা-সংস্কারে আগ্রহী তারই উদ্যোগে তেজগাওস্থিত ‘পলিটেকনিক হাইস্কুল’ প্রতিষ্ঠিত হয়। বঙ্গীয় কৃষি-বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর তিনি ন্যায় ও দর্শনশাস্ত্ৰেও সুপণ্ডিত ছিলেন।
Leave a Reply