দেবপ্রসাদ মিত্র (২৯-১২-১৯০২ – ৮-২-১৯৭৮) কোন্নগর-হুগলী। জন্ম কটক শহরে। পিতা জ্যোতিরিন্দ্ৰপ্ৰসাদ পার্বত্য ত্রিপুরা রাজ্যের সহকারী ম্যানেজার ছিলেন। পিতামহ ব্রজসুন্দর ঢাকায় ব্ৰাহ্ম আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোক্তা। বিশিষ্ট জীবাণুবিদ। ১৯১৯ খ্রী হেয়ার স্কুল থেকে ম্যাট্রিক ও ১৯২১ খ্রী প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে আইএস-সি. পরীক্ষায় অষ্টম স্থান অধিকার করে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। ভাল ছাত্র হিসাবে নানা পুরস্কার ও ‘আবদুল গণি বৃত্তি’ পান। তাঁর সময়ে মেডিক্যাল কলেজে স্টুডেন্টস ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয় ও তিনি তার সভাপতি হন। স্বদেশসেবার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ডাক্তারি পড়ার সময়ে কয়েকজন বন্ধু মিলে গ্রামের লোকদের চিকিৎসা করতেন। ১৯২১ খ্রী. অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন, চরকা কাটেন। তখন থেকেই খন্দর ব্যবহার করতেন। ১৯২৭ খ্রী. এম.বি. পাশ করে বন্ধু ডাঃ নারায়ণ রায়, ডাঃ সুধীর সান্ন্যাল ও ডাঃ নলিন গুপ্তের সঙ্গে ১৯২৮ খ্রী. ‘Calcutta Bacteriological Institute’ প্রতিষ্ঠা করে আমৃত্যু তার সঙ্গে যুক্ত থাকেন। কর্মজীবনের প্রথম থেকে ক্যালকাটা মেডিক্যাল ক্লাবের সম্পাদক ছিলেন। সশস্ত্ৰ বিপ্লবীদের প্রতি তাঁর সহানুভূতি ছিল। গোপনভাবে চন্দননগরে গিয়ে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার আক্রমণ মামলার আত্ম-গোপনকারী বিপ্লবীদের চিকিৎসা করেছেন। ১৯৫৫ খ্রী. থেকে সাধারণ ব্ৰাহ্ম সমাজের কাজে আত্মনিয়োগ করেন। বিভিন্ন সময়ে ব্ৰাহ্মসমাজের সহকারী সম্পাদক, সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ ও সভাপতি ছিলেন। ১৯৪২ ও ১৯৪৩ খ্রী. মহাদুর্ভিক্ষের সময় ‘ব্রাহ্ম রিলিফ মিশন’ গঠন করে কলিকাতা ও কাকদ্বীপে ত্ৰাণকাৰ্য করেন। দেশ ভাগ হয়ে যাবার পর উদ্বাস্তু অসহায় মেয়েদের জন্য ও নোয়াখালির সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত দুঃস্থ মেয়েদের স্বাবলম্বী করে তলার জন্য ‘মহিলাভবন’ গড়ে তোলেন। এ ছাড়া স্বগ্রাম কোন্নগরে মেয়েদের ‘শিল্প বিদ্যালয়’ ও নিমতার ‘বিধবাশ্রম’ এবং ‘ব্রাহ্ম ট্রেনিং কলেজ’ও তাঁর সৃষ্টি। যশোহর ও খুলনায় অনুন্নত শ্ৰেণীদের মধ্যে ঘুরে ঘুরে কাজ করেছেন। ব্ৰাহ্ম মিশনের সাহায্যে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে আনা শিশুদের নিয়ে ‘বালভবন’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে প্ৰধানতঃ তারই উদ্যোগে।
পূর্ববর্তী:
« দেবপ্রসাদ ঘোষ
« দেবপ্রসাদ ঘোষ
পরবর্তী:
দেবপ্ৰসাদ গুপ্ত »
দেবপ্ৰসাদ গুপ্ত »
Leave a Reply