দেবজ্যোতি বৰ্মণ (১৭.৫.১৯০৫ – ৮.১২.১৯৬৬) কলিকাতা। অশ্বিনী। পৈতৃক নিবাস ময়মনসিংহ। শৈশব ও বাল্যকাল প্ৰধান-শিক্ষিকা মাতা তরুলতার কর্মস্থল শ্ৰীহট্টে কাটে। স্কুল-জীবনেই বিপ্লবী দলের সংস্পর্শে আসেন। ১৯২১ খ্রী. অসহযোগ আন্দোলনের সময় স্কুল ছাড়েন। সেখানকার শ্ৰীহট্টের রাজা গিরিশচন্দ্ৰ হাই স্কুল থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে প্ৰবেশিকা পাশ করেন (১৯২৩)। ১৯২৫ খ্রী আই-এস-সি পাশ করে কলিকাতার বঙ্গবাসী কলেজে ভর্তি হন ও ‘যুগবাণী সাহিত্যচক্র’ প্রতিষ্ঠা করেন। সেখান থেকে পুস্তক প্রকাশনা ছাড়াও অন্তরালে বিপ্লবী কার্যকলাপ চালাতেন। কিছুদিন পরে ‘যুগবাণী’ পত্রিকা প্ৰকাশ করেন। ১৯৩১ খ্রী. আটক-বন্দী হন। পুলিসের ধারণা ছিল গঙ্গাবক্ষে নূতন সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে লর্ড উইলিংডনের নিধন-চেষ্টার ব্যাপারে দেবজ্যোতিও সংশ্লিষ্ট। ১৯৩৩ খ্রী. জেল থেকে ইকনমিক্সে বি.এ. (অনার্স সহ) ও ১৯৩৬ খ্রী. এম-এ পাশ করেন। বক্সার জেলে বন্দী অবস্থায় ‘ইকনমিক হিস্ট্রি অফ বেঙ্গল’ নামে এক নিবন্ধ রচনা করেন। ১৯৩৮ খ্রী. মুক্তিলাভের পর প্রথমে আনন্দবাজার পত্রিকায় স্থায়িভাবে যোগ দিলেও পরে ঐ কাজ ছেড়ে দিয়ে ‘আনন্দবাজার’, ‘ভারতবর্ষ’ ও ‘মডার্ন রিভিউ’ পত্রিকায় লিখতেন এবং এশিয়াটিক সোসাইটির পার্ট-টাইম কর্মী হন। ১৯৪৯ খ্ৰী. নবপর্যায়ে ‘যুগবাণী’ সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করে আমৃত্যু তার সম্পাদনা করেন। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ টি বিভিন্ন বিষয়ে এম.এ. পাশ করেন। সংস্কৃত, আরবী, জার্মান ও ফরাসী ভাষায় দখল ছিল। বঙ্গবাসী কলেজ ও সিটি কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৯৫৩ খ্রী. কলিকাতা কপোরেশনের কাউন্সিলার নির্বাচিত হন। ১৯৬১ খ্রী ’ফ্রেন্ডস অফ ইণ্ডিয়া’র আমন্ত্রণে আমেরিকা সফর করেন। রাজনীতিক্ষেত্রে তিনি United Citizens’ Council ও B.N.V.P. দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ‘মিস্ট্রিজ অব বিড়লা হাউস’ তার বিশেষ উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। অপর গ্রন্থ : ‘কার্ল মার্কস’, ‘রবীন্দ্রনাথ’, ‘আধুনিক ইউরোপ’, ‘বাঙ্গালার রাষ্ট্ৰীয় সাধনা’, ‘বিজিনেস অৰ্গেনাইজেশন’ প্রভৃতি।
পূর্ববর্তী:
« দেবকুমার রায়চৌধুরী
« দেবকুমার রায়চৌধুরী
পরবর্তী:
দেবনারায়ণ চৌধুরী »
দেবনারায়ণ চৌধুরী »
Leave a Reply