দেবকীকুমার বসু (২৫-১১-১৮৯৮ – ১৭-১১-১৯৭১) বর্ধমান। মধুসূদন। প্ৰখ্যাত চিত্ৰনাট্যকারন ও পরিচালক। বিদ্যাসাগর কলেজে ছাত্রাবস্থায় নাট্যাচার্য শিশিরকুমারের সাহযর্য লাভ করেন। অসহযোগ আন্দোলনের ডাকে কলেজ ত্যাগ করে জাতীয় আন্দোলনে যোগ দেন। ‘শক্তি’ নামে একটি দেশাত্মবোধক সাপ্তাহিক সম্পাদনা করেন। এই ব্যাপারে ডিজি, বা ধীরেন গাঙ্গুলীর সঙ্গে পরিচিত হয়ে চিত্ৰজগতে প্ৰবেশ করেন। গল্পকার ও চিত্ৰনাট্যকার-রূপে তার প্রথম ছবি ব্রিটিশ ডোমিনিয়ন কোম্পানির ‘Flame and Flesh’ (১৯২৭)। পরবর্তী ছবি ‘পঞ্চশর’ (১৯২৯) মারফত খ্যাতির সোপানে ওঠেন। তিনিই প্রথম মঞ্চানুগ চিত্রকর্মকে চলচ্চিত্রোপযোগী রূপ দান করেন। প্ৰমথেশ বড়ুয়ার প্রতিষ্ঠানের প্রথম নির্বাক ছবি ‘অপরাধী’র কাহিনীকার, চিত্ৰনাট্যকার এবং পরিচালক ছিলেন। এই ছবিতেই প্রথম অন্তর্দৃশ্যে কৃত্ৰিম আলোর সাহায্যে চিত্ৰগ্ৰহণ করা হয়। সদ্যপ্রতিষ্ঠিত ‘নিউ থিয়েটার্স’-এ ‘চণ্ডীদাস’ ছবি (১৯৩২) রূপায়িত করার সঙ্গে সঙ্গেই ভারত-জোড়া খ্যাতি লাভ করেন। এই ছবিতে অন্যান্য বহু কলাকৌশলের সঙ্গে আবহ সঙ্গীতের সাহায্য গ্ৰহণ করা হয়। এখানে অপর নির্মিত চিত্র ‘পুরাণ ভকত’ (হিন্দী), ‘মীরাবাঈ’ (দ্বৈভাষিক) প্রভৃতি। ১৯৩৫ খ্ৰী ‘ঈস্ট ইণ্ডিয়া ফিল্ম কোম্পানী’তে যোগ দেন। এখানে ‘সীতা’ (হিন্দী) ও ‘সোনার সংসার’ (দ্বৈভাষিক) ছবি তোলেন। ‘সীতা’ই প্ৰথম ভারতীয় চলচ্চিত্র যা ১৯৩৫ খ্ৰী. ভেনিস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনীতে কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ সাটিফিকেট অর্জন করে। এরপর বোম্বাই শহরে স্বনামে প্ৰতিষ্ঠান গঠন করে ছবি তোলেন। ১৯৩৭ খ্ৰী. পুনরায় নিউ থিয়েটার্সে যোগ দেন। ‘বিদ্যাপতি’ (দ্বৈভাষিক), ‘সাপুড়ে’, ‘নর্তকী’ প্রভৃতি চিত্রগুলি এ সময়কার স্মরণীয় সৃষ্টি। ক্রমে স্বাধীনভাবে ‘আপনা ঘর’ (হিন্দী), ‘মেঘদূত’, ‘কৃষ্ণলীলা’, ‘কবি’, ‘রত্নদীপ’, ‘চন্দ্রশেখর’, ‘পথিক’, ‘চিরকুমার সভা’ প্রভৃতি ছবি করেন। শেষ ছবি রবীন্দ্রনাথের চারটি কবিতা অবলম্বনে রচিত ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রযোজিত ‘অর্ঘ্য’। ১৯৫৬ খ্রী. সাহিত্য আকাদেমী কর্তৃক সম্মানিত ও ১৯৬৫ খ্ৰী. ‘পদ্মশ্ৰী’ উপাধিতে ভূষিত হন।
পূর্ববর্তী:
« দেওয়ান শাহ্ হুসেন আল-কাদ্রী আল হোসেনী
« দেওয়ান শাহ্ হুসেন আল-কাদ্রী আল হোসেনী
পরবর্তী:
দেবকুমার রায়চৌধুরী »
দেবকুমার রায়চৌধুরী »
Leave a Reply