দীনেশরঞ্জন দাশ (২৯.৭.১৮৮৮ – ১২.৫.১৯৪১) কুঁয়রপুর-ফরিদপুর। কৈলাসচন্দ্ৰ। প্ৰখ্যাত ‘কল্লোল’ পত্রিকার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক। চট্টগ্রাম স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাশ করে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু স্বদেশী আন্দোলনের প্রভাবে কলেজ ত্যাগ করেন। ছবি আঁকা ছিল তার সহজাত গুণ। কিছুকাল আর্ট স্কুলে শিল্প শিক্ষা করেন। কার্টুন ছবি ভাল আঁকতেন। কর্মজীবনের প্রথম দিকে কিছুকাল কখনও ক্রীড়া-সরঞ্জামের দোকানে, কখনও ঔষধের দোকানে চাকরি করেন। কিন্তু চাকরিজীবন ভাল না লাগায় বিভিন্ন প্ৰকাশকের পুস্তকাদির প্রচ্ছদপট, ছবি ও কাটুন অঙ্কন এবং অল্পস্বল্প লেখা নিয়ে জীবিকা চালাতে থাকেন। ১৩৩০ বঙ্গাব্দে গোকুলচন্দ্ৰ নাগের সহযোগিতায় নব্য লেখকদের নিয়ে তিনি ‘কল্লোল’ মাসিক সাহিত্য-পত্রিকা প্ৰকাশ করেন। এই পত্রিকা প্ৰকাশের পর সে-সময়ের লেখক ও পাঠক মহলে পক্ষে-বিপক্ষে দারুণ আলোড়নের সৃষ্টি হয়েছিল। ফলে সেই যুগ বাংলা সাহিত্যের ‘কল্লোল যুগ’ আখ্যা লাভ করে। ক্রমে পুস্তকাদি প্রকাশনেও উদ্যোগী হন। ভাল অভিনয়ও করতে পারতেন। ব্ৰহ্মানন্দ কেশব সেনের ভবন ‘কমল কুটিরে’ কেশবচন্দ্র-রচিত ‘নববৃন্দাবন’ নাটকের অভিনয়ে তিনি প্রথম জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। ‘কল্লোল’ পত্রিকার আর্থিক অবস্থা শোচনীয় হওয়ায় তিনি চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হন ও ক্রমে সিনারিও-লেখক, পরিচালক এবং বিভিন্ন ছবিতে অভিনেতার ভূমিকা গ্ৰহণ করেন। ১৯৩৪ খ্রী তিনি নিউ থিয়েটার্স-এর অন্যতম ডিরেক্টররূপে তার কর্মমণ্ডলীতে যোগদান করেন। আমৃত্যু তিনি ঐ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ‘আলো-ছায়া’ তার পরিচালিত একটি চলচ্চিত্র। তার রচিত গ্ৰন্থ : ‘উতঙ্ক’ (রূপক নাট্য), ‘মাটির নেশা’ এবং ‘ভুঁইচাপা’ (গল্পসংগ্রহ), ‘কাজের মানুষ’ (ব্যঙ্গ রচনা) ইত্যাদি।
পূর্ববর্তী:
« দীনেশচরণ বসু
« দীনেশচরণ বসু
পরবর্তী:
দীপেন বসু »
দীপেন বসু »
Leave a Reply