দীনেশচন্দ্র মজুমদার (১৯০৭ – ৯.৬.১৯৩৪) বসিরহাট — চব্বিশ পরগনা। পূৰ্ণচন্দ্র। ১৯২৮ খ্রী. বি.এ. পাশ করে আইন-শিক্ষা শুরু করেন। আইএপড়ার সময় যোগাভ্যাস করতেন; পরে সিমলা ব্যায়াম সমিতিতে লাঠি ও ছোরা খেলা শিক্ষা করেন। প্রতিবেশী বিপ্লবী অনুজাচরণ সেনের মাধ্যমে যুগান্তর বিপ্লবী দলে যোগ দেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বাঘা যতীনের নেতৃত্বে বিপ্লবী অভ্যুত্থানের সময় বালেশ্বরের গুপ্ত ঘাঁটির পরিচালক শৈলেশ্বর বোস টিবি, রোগাক্রান্ত হলে অনুজার সঙ্গে রাত জেগে সেবা করেন। এরপর দলনেতার নির্দেশে তিনি বগুড়া ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় বিপ্লবী সংগঠনের কাজে ব্ৰতী হন। লাঠি খেলার শিক্ষক হিসাবে ‘ছাত্রী সঙ্ঘ’ প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেন। দলের নির্দেশে ২৫-৮-১৯৩০ খ্রী. টেগাট নিধনচেষ্টায় আক্রমণকারী তিনজনের তিনি অন্যতম ছিলেন। আক্রমণকালে তিনি গ্রেপ্তার হন। বিচারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয়। ১৯৩২ খ্রী. মেদিনীপুর জেল থেকে অপর দুই বিপ্লবী সহ পালাবার সময় পা ভাঙ্গা সত্ত্বেও আত্মগোপনে সমর্থ হন। আত্মগোপনকালে কুলির কাজও করেছেন। অবশেষে চন্দননগরে শ্ৰীশ ঘোষের সাহায্যে আশ্রয় পান। ১৯৩২ খ্রী. তার নেতৃত্বাধীনে দু’বার ওয়াটসন হত্যার চেষ্টা হয়। চন্দননগরের পুলিসকমিশনার কুইনের নেতৃত্বে একদল পুলিস বিপ্লবীদের তাড়া করলে দীনেশের গুলিতে কুইন নিহত হন এবং তিনি বিপ্লবীদের নিয়ে আত্মগোপন করেন। এই সময় পুলিসী অত্যাচার ও ব্যাপক গ্রেপ্তারের ফলে দলের অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে। তখন তিনি দলের পুনরুজ্জীবনের চেষ্টা করেন। গ্ৰীন্ডলে ব্যাঙ্কের জনৈক কর্মচারীর সাহায্যে টাকা সরিয়ে সেই টাকায় অস্ত্ৰ কেনার চেষ্টা হয়। এ সময়ে তিনি কর্নওয়ালিশ স্ট্রীটে থাকতেন। ২২-৫-১৯৩৩ খ্রী. পুলিস সন্ধান পেয়ে বাড়িটি আক্রমণ করলে উভয় পক্ষে গুলি-বিনিময় চলে। দীনেশ, জগদানন্দ ও নলিনী শেষ বুলেট পর্যন্ত লড়াই করে আহত অবস্থায় ধরা পড়েন। বিচারে তার প্রাণদণ্ডাদেশ ও অপর দু’জনের যাবজীবন কারাদণ্ড হয়।
পূর্ববর্তী:
« দীনেশ গঙ্গোপাধ্যায়
« দীনেশ গঙ্গোপাধ্যায়
পরবর্তী:
দীনেশচন্দ্র সরকার »
দীনেশচন্দ্র সরকার »
Leave a Reply