দিলীপকুমার রায় (১৮৯৭ – ৬.১.১৯৮০) কৃষ্ণনগর–নদীয়া। সাহিত্যিক দ্বিজেন্দ্রলাল। প্ৰখ্যাত কবি, গায়ক, সুরকার ও লেখক। বাল্যে মাতৃবিয়োগ হলে পিতার যত্নে পালিত হন। তার কাছেই বেদ ও পুরাণ পাঠ করেন। ১৬ বছর বয়সে পিতার মৃত্যু হলে ধনী মাতামহের তত্ত্বাবধানে থাকেন। ১৯১৮ খ্রী. অঙ্কশাস্ত্ৰে প্ৰথম শ্রেণীর অনার্সসহ বি.এ. পাশ করে ইংল্যাণ্ডের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান। সেখানে অঙ্কশাস্ত্রে ট্রাইপসের প্রথম ভাগ ও পাশ্চাত্য সঙ্গীতের প্রথম ভাগ পাশ করেন। কিছুদিন আইনশাস্ত্রও পড়েছিলেন। পরে জার্মান ও ইতালীয় সঙ্গীত শিখতে বার্লিন যান। ১৯২২ খ্রী. দেশে ফিরে আব্দুল করিম, ফয়েজ খা, পণ্ডিত ভাতখণ্ডে প্ৰমুখের কাছে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে শিক্ষালাভ করেন। ১৯২৭ খ্রী. সঙ্গীত সম্বন্ধে করতে ইউরোপে যান। ১৯২৮ খ্রী. পণ্ডিচেরীতে শ্ৰীঅরবিন্দ প্রতিষ্ঠিত আশ্রমে যোগ দিয়ে ১৯৫০ খ্রী. পর্যন্ত সেখানে থাকেন। ১৯৩৮ খ্রী. সরকারের অনুরোধে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীতের পাঠ্যসূচীর জন্য তিনি ‘গীতসাগর’ ও ‘সাঙ্গীতিকী’ গ্ৰন্থ দুখানি রচনা করেন। ১৯৫৩ খ্রী. ভারত সরকার প্রেরিত সঙ্গীত মিশনে গিয়ে তিনি ইউরোপের বহু দেশে, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে, জাপানে ও মিশরে সঙ্গীতের উপর ভাষণ দেন। দেশে ফিরে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় বা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত না হয়ে বন্ধু জি.ভি. মেহতার আমন্ত্রণে পুনায় তাঁর গৃহে গিয়ে বাস করতে থাকেন। ক্রমে সে বাসস্থানটি তার চেষ্টায় ‘শ্ৰীহরিকৃষ্ণ মন্দির’-এ পরিণত হয় এবং নিজে সন্ন্যাসীর জীবন যাপন করতে থাকেন। সুভাষচন্দ্ৰ বসু ও জওহরলাল নেহেরুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তিনি রবীন্দ্রনাথ, গান্ধীজী, রম্যা রলা, বাট্রাণ্ড রাসেল প্রমুখ দেশবিদেশের বহু মনীষীর সংস্পর্শে আসেন। তার রেকর্ড-করা গানের সংখ্যা প্ৰায় এক শ’। ‘সঙ্গীত রত্নাকর’ উপাধি-ভূষিত ছিলেন। ১৯৬৫ খ্ৰী. সঙ্গীত নাটক একাডেমীর সদস্য হন। রচিত অন্যান্য গ্ৰন্থ : ‘দুধারা’, ‘দোলা’, ‘বহুবল্লভ’, ‘তরঙ্গ রোধিবে কে’, ‘দ্বিচারিণী’, ‘ভূস্বৰ্গ চঞ্চল’, ‘তীৰ্থঙ্কর’, ‘সুরবিহার’, ‘মধুমুরলী’, ‘ভিখারিণী রাজকন্যা’, ‘উদাসী দ্বিজেন্দ্রলাল’, ‘অঘটনের শোভাযাত্রা’ প্রভৃতি।
পূর্ববর্তী:
« দিলীপকুমার গুপ্ত, ডি. কে.
« দিলীপকুমার গুপ্ত, ডি. কে.
পরবর্তী:
দিলীপকুমার রায়চৌধুরী »
দিলীপকুমার রায়চৌধুরী »
Leave a Reply