ত্ৰিভঙ্গ রায় (১৯০৬ – ৯.৬.১৯৭৯) বনপাস-বর্ধমান। শিল্পী ও সাহিত্যিক। ছাত্রাবস্থাতেই তিনি তুলির সঙ্গে লেখনী ধরেছিলেন। তুলির টানে পৌরাণিক ঘটনাবলী অঙ্কনে নৈপুণ্য ছিল। বাংলা, সংস্কৃত, ইংরাজী এবং গণিতে লেটার সহ বোলপুর শিক্ষানিকেতন থেকে প্ৰথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করেন। অবনীন্দ্ৰনাথের সান্নিধ্যে তার শিল্পিজীবন দ্রুত এগিয়ে চলে। তার আগে তিনি শ্ৰীমদ নিরালম্ব স্বামীর (যতীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়) সঙ্গে দীর্ঘদিন সংযুক্ত ছিলেন। কিশোর বয়সে চান্নার আশ্রমে স্বামীজীর কাছে প্রায়ই যেতেন। তার মুখে বৈপ্লবিক দিনের ইতিহাস শুনতেন, তাকে সেবা করতেন। শিল্পাচার্য অবনীন্দ্রনাথ ছাড়া ক্ষিতীন্দ্রনাথ মজুমদারের কাছেও তিনি শিক্ষা গ্ৰহণ করেন। সেইসঙ্গে ইন্ডিয়ান সোসাইটি অফ ওরিয়েন্টাল আর্টসেও যাতায়াত করতেন। তার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ শিল্পকার্য—কানপুরের জে.কে. অরগানাইজেশনের ‘কমলা টেম্পল’-এর অভ্যন্তর দেয়ালে অঙ্কিত পৌরাণিক শ্ৰীকৃষ্ণ-বিষয়ক ঘটনাবলীর চিত্ররূপ। ১৯৩২ খ্ৰী. দিল্লীর প্রদর্শনীতে সিল্কের উপর চিত্রিত তার ‘হোলি’-বিষয়ক চিত্রটি স্বর্ণপদক লাভ করে। ১৯৪১ খ্রী. কলিকাতা একাডেমী অব ফাইন আর্টস থেকে স্বর্ণপদক পান। মাটির প্রতিমা নির্মাণেও সিদ্ধহস্ত ছিলেন। সাহিত্যিক হিসাবেও খ্যাতি ছিল। তার রচিত প্ৰথম গ্ৰন্থ ‘গৌতম বুদ্ধ’। ‘কিশোর বাংলা’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাকাল থেকে তিনি তার সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন। উল্লেখযোগ্য গ্ৰন্থ: ‘মানিক অঙ্গুরী’, ‘ছুটির চিঠি’, ‘বাঙলা মায়ের রূপকথা’, ‘রাঙাদির রূপকথা’ প্রভৃতি।
পূর্ববর্তী:
« ত্ৰিপথনাথ কাব্য-ব্যাকরণ-স্মৃতিতীৰ্থ
« ত্ৰিপথনাথ কাব্য-ব্যাকরণ-স্মৃতিতীৰ্থ
পরবর্তী:
ত্ৰিভুবন সাঁওতাল »
ত্ৰিভুবন সাঁওতাল »
Leave a Reply