তুলসীচরণ গোস্বামী (১৮.৬.১৮৯৮ – ১৯৫৭) শ্ৰীরামপুর-হুগলী। বেঙ্গল গভর্নরের একজিকিউটিভ কাউন্সিলের প্রথম ভারতীয় সভ্য রাজা কিশোরীলাল। ১৯১৭ খ্ৰী. তিনি কলিকাতা সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল থেকে সিনিয়র কেমব্রিজ পরীক্ষা পাশ করে ইংল্যান্ড যান এবং ১৯১৯ খ্রী. অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক ও ১৯২১ খ্রী. ব্যারিস্টার হন। গ্ৰীক, ল্যাটিন ও জার্মান ভাষায়ও দক্ষ ছিলেন। দেশে ফিরে কিছুদিন কলিকাতা হাইকোর্টে আইন ব্যবসায় করেন। পরে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের আহ্বানে আইন ব্যবসায় ত্যাগ করে জাতীয় আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েন। ১৯২৩ খ্রী. স্বরাজ্য পার্টিতে যোগ দিয়ে তার মুখপত্র ফরওয়ার্ড পত্রিকার সম্পাদক হন এবং দল পরিচালনায় চিত্তরঞ্জনকে সব রকম সাহায্য করেন। ১৯২৩ খ্ৰী. কেন্দ্রীয় লেজিসলেটিভ অ্যাসেমব্লিতে নির্বাচিত হন এবং সেখানে স্বরাজ্য পার্টির প্রধান হুইপ ও বিরোধী পক্ষের ডেপুটি লীডার ছিলেন। বক্তা হিসাবে খ্যাতি লাভ করেন। তাঁর সম্বন্ধে সরকার পক্ষের একজন বলেছিলেন, “that gentleman with an Oxonian tongue who on Occasions in the past proved to be a terror to the treasury benches.” চিত্তরঞ্জনের মৃত্যুর পর তিনি সুভাষচন্দ্রের সঙ্গে কাজ করেন। ১৯৩২ খ্রী. কম্যুনাল এওয়ার্ডের বিরোধিতা করে কলিকাতায় যে বিশাল সভা ডাকেন তার সভাপতিত্ব করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ১৯৩৭ খ্রী. বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভায় নির্বাচিত ও কংগ্রেস দলের ডেপুটি লীডার হন। ১৯৪৩ খ্রী নাজিমুদিন মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রী হিসাবে যোগ দেন। দেশবিভাগের বিরোধী ছিলেন। ১৯৪৭ খ্রী. দেশ বিভক্ত হয়ে স্বাধীন হলে তিনি মর্মাহত হন এবং কংগ্রেস ছেড়ে সত্যরঞ্জন বক্সী গঠিত ‘সিনথেসিস’ দলে যোগ দেন। ১৯৫২ খ্রী. সাধারণ নির্বাচনে লোকসভার আসনের জন্য প্ৰতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। এর পরই তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নেন। শ্ৰীরামপুর পাবলিক লাইব্রেরী ও স্থানীয় মিউনিসিপ্যালিটির জন্য গৃহ নির্মাণ করে ১৯২৯ খ্রী. তা দান করে যান। বহু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল।
পূর্ববর্তী:
« তুলসী লাহিড়ী
« তুলসী লাহিড়ী
পরবর্তী:
তুলসীদাস চট্টোপাধ্যায় »
তুলসীদাস চট্টোপাধ্যায় »
Leave a Reply