তারাপদ চক্রবর্তী (১৩.৪.১৯০৯ – ১.৯.১৯৭৫) কোটালিপাড়া — ফরিদপুর। সঙ্গীতজ্ঞ পণ্ডিত কুলচন্দ্র। প্ৰখ্যাত কণ্ঠশিল্পী ও সঙ্গীতাচার্য। পিতা, পিতামহ ও প্ৰপিতামহ সকলেই সঙ্গীতে পারদর্শী ছিলেন। প্ৰথমে পিতার নিকট সঙ্গীত-চৰ্চা শুরু করেন। পরে সাতকড়ি মালাকার এবং সঙ্গীতাচাৰ্য গিরিজাশঙ্কর চক্রাবতীর নিকট শিক্ষাগ্ৰহণ করেন। ১৭ বছর বয়সে কলিকাতায় আসেন ও কিছুকাল নিরাশ্রয় অবস্থায় দিন কাটান। এই অবস্থায়ও তিনি সঙ্গীতচর্চা অব্যাহত রাখেন। তবলাবাদনেও তার বিশেষ দক্ষতা ছিল। রাইচাঁদ বড়ালের সাহায্যে তিনি বেতারে চাকরি গ্ৰহণ করেন। এখানে বিভিন্ন সময়ে শিল্পী এনায়েৎ খা, হাফিজ আলী খা, আলাউদ্দিন খাঁ প্ৰমুখের সঙ্গে কৃতিত্বের সঙ্গে সঙ্গত করেছেন। ক্রমে তিনি কণ্ঠশিল্পিীরূপে ছায়াহিন্দোল, নবমালিকা, নবগ্ৰী প্রভৃতি রাগ-রাগিণীতে, বিশেষ করে বাংলা খেয়ালে (স্থায়ী ও অন্তরায়) ভারতের সর্বত্ৰ অসামানা খ্যাতি অর্জন করেন। বাংলা ভাষায় তিনি খেয়াল ও ঠুংরি গানের প্রথম প্রবর্তক। বহু উপাধিপ্রাপ্ত ছিলেন। উল্লেখযোগ্য উপাধি; ভাটপাড়া পণ্ডিতসমাজ কর্তৃক ‘সঙ্গীতাচাৰ্য, বিদ্বৎ সম্মিলনী থেকে ‘সঙ্গীত রত্নাকর’ ও কুমিল্লা সঙ্গীত পরিষদ থেকে ‘সঙ্গীতাৰ্ণব’। ১৯৭২ খ্রী. সঙ্গীত-নাটক আকাডেমির সদস্য নির্বাচিত হন এবং রাজ্য সরকারের আকাডেমি-পুরস্কার পান। ভারত সরকার ১৯৭৩ খ্রী. তাকে ‘পদ্মশ্ৰী’ উপাধি-ভূষিত করলে জীবন-সায়াহ্নে তিনি ঐ উপাধি গ্রহণে অসম্মতি জানান। বিশ্বভারতীর নির্বাচন-বোর্ডের সদস্য ছিলেন। নিজেও কয়েকটি নূতন রাগের সৃষ্টি করেন। তিনি ‘সুরতীৰ্থ নামক সঙ্গীতগ্রন্থের রচয়িতা।
পূর্ববর্তী:
« তারানাথ সিদ্ধান্তবাগীশ
« তারানাথ সিদ্ধান্তবাগীশ
পরবর্তী:
তারাপদ বন্দ্যোপাধ্যায় »
তারাপদ বন্দ্যোপাধ্যায় »
Leave a Reply