তারানাথ তর্কবাচস্পতি (নভে ১৮১২ – ২০.৬.১৮৮৫) কালনা–বর্ধমান। কালিদাস সার্বভৌম। ১৮৩০–১৮৩৫ খ্রী. পর্যন্ত সংস্কৃত কলেজে অধ্যয়ন করে তিনি ‘তর্কবাচস্পতি’ উপাধি প্ৰাপ্ত হন। পরে চার বছর কাশীতে বেদান্ত ও পাণিনি অধ্যয়ন করেন। কাশী থেকে ফিরে এসে স্বগ্রামে টোল খোলেন। ১৮৪৫ খ্রী. কলিকাতা সংস্কৃত কলেজে ব্যাকরণের অধ্যাপক নিযুক্ত হয়ে ১৮৭৩ খ্রী. পর্যন্ত অধ্যাপনা করেন। ১৮৪৬ খ্রী. কিছুদিনের জন্য সংস্কৃত কলেজের সহকারী সম্পাদক হয়েছিলেন। এর আগে কাপড়ের কারবারও করতেন। সরকারী চাকরি গ্রহণের পর পুত্ৰ জীবানন্দ বিদ্যাসাগরের নামে ব্যবসায় চালাতে থাকেন। তিনি বাল্যবিবাহের বিরোধী, স্ত্রী-শিক্ষায় উৎসাহী এবং হিন্দুমেলার উদ্যোগী সংগঠক ছিলেন। শিক্ষালাভের জন্য নিজ কন্যা জ্ঞানদাকে বেথুন সাহেবের স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলেন। বিধবা-বিবাহ আন্দোলনে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পরম সহায়ক ছিলেন। কিন্তু বিদ্যাসাগরের বহুবিবাহ-নিরোধ আন্দোলনের বিরোধিতা করেন। দেশ-প্রচলিত প্রতিমাপূজায় তাঁর আস্থা ছিল না এবং সমুদ্রযাত্রাকে তিনি অশাস্ত্রীয় বলে মনে করতেন না। ব্যাকরণ, স্মৃতি, অলঙ্কার, ন্যায়, বেদ, উপনিষদ, জ্যোতিষ প্রভৃতি শাস্ত্রে অসাধারণ দক্ষতা ছিল। ১৮৭৫ খ্রী যুবরাজ এডওয়ার্ডের ভারত আগমনে বাঙালীদের পক্ষ থেকে অভ্যর্থনা উপলক্ষে রাজপ্রশস্তি রচনা করেছিলেন। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্ৰন্থাবলীর মধ্যে সিদ্ধান্ত কৌমুদীর উপর ‘সরলা’-নাম্নী টীকা পাশ্চাত্য দেশেও সমাদৃত হয়। ১২ বছরের চেষ্টায় (১৮৭৩–৮৪) রচিত তাঁর প্রধান কীর্তি সংস্কৃত অভিধান ‘বাচস্পত্য’। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্ৰন্থাবলী : ‘শব্দস্তোমমহানিধি’ (অভিধান, ১৮৬৯ – ৭০), ‘শব্দার্থরত্ন’ (১৮৫২), ‘বহুবিবাহবাদ’, ‘বিধবা-বিবাহ-খণ্ডন’ প্রভৃতি।
পূর্ববর্তী:
« তারাদাস মুখোপাধ্যায়
« তারাদাস মুখোপাধ্যায়
পরবর্তী:
তারানাথ সিদ্ধান্তবাগীশ »
তারানাথ সিদ্ধান্তবাগীশ »
Leave a Reply