জ্যোতিরিন্দ্রনাথ মৈত্র। (নভে. ১৯১১ – ২৬.১০.১৯৭৭) শীতলাই–পাবনা। জমিদার পিতা যোগেন্দ্ৰনাথ পাবনার তৎকালীন জাতীয় আন্দোলনের নেতা ছিলেন। প্ৰখ্যাত গায়ক-কবি। কলিকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে বিএস-সি, ও পরে বি.এ. পাশ করেন। ইংরেজীতে এম.এ পড়ার সময় কবি বিষ্ণু দে তাঁর সতীর্থ ছিলেন। ছাত্রাবস্থায় তার রচিত কবিতা ‘পরিচয়’ ও বিভিন্ন বিশিষ্ট পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ক্লাসিক্যাল সঙ্গীতে শিক্ষা হরিচরণ চক্রবর্তী, ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়, কালীনাথ চট্টোপাধ্যায় ও আশফাক হোসেনের কাছে। সরলাদেবী চৌধুরানী, ইন্দিরা দেবী ও অনাদি দস্তিদারের কাছে রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিম নেন। অল্পবয়স থেকেই সেতার, এস্রাজ, তবলা ও ঢাক বাজাতে শিখেছিলেন। পাশ্চাত্য সঙ্গীতেও অনুসন্ধিৎসা ছিল। তার রচিত ‘নবজীবনের গান’-এ ভারতীয় মাৰ্গসঙ্গীতের সঙ্গে পাশ্চাত্য সঙ্গীতের সমন্বয় লক্ষণীয়। তা ছাড়া লোকসঙ্গীতকেও তিনি বিভিন্নভাবে ব্যবহার করেছেন। ১৯৩৯–৪০ খ্রী. কমিউনিস্ট আন্দোলনে যোগ দিয়ে আজীবন ঐ পার্টির সঙ্গে জড়িত থাকেন। ফ্যাসী-বিরোধী লেখক ও শিল্পী অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম প্ৰতিষ্ঠাতা ছিলেন। বহু চলচ্চিত্রের তিনি সুরকার। তবে ‘জগতে আনন্দ যজ্ঞে’। এই একটি গানই তিনি রেকর্ড করেছেন। পাচের দশকের মাঝামাঝি দিল্লীতে যান। সেখানে সঙ্গীত-নাটক-একাডেমী ও ভারতীয় কলাকেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দিল্লীতে তারই প্রযোজনায় ‘রামচরিত মানস’ ছায়ানাট্য নতুনভাবে অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭২ খ্রী. বিষ্ণু দে-র ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষৎ’ গ্রন্থের কবিতায় তিনি সুর দেন। শ্রীবেদব্যাসের সঙ্গে হিন্দী ভাষায় তাঁর গীতিনাট্যানুষ্ঠান করিয়েছিলেন। দিল্লী থেকে আসার পর বাংলাদেশের শিল্পীদের আহ্বানে ঢাকাতে গিয়ে ‘নবজীবনের গান’ ও অন্যান্য সঙ্গীত শেখান। ভারতের নানা স্থানে, মস্কোতে ও ১৯৭৩ খ্রী. পূর্ব জার্মানীতে ভ্ৰমণকালের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি তার রচিত বিভিন্ন কবিতায় প্ৰকাশ পেয়েছে। শেষজীবনে মেদিনীপুরের ঝাড়গ্রামে জমি কিনে ‘কর্ষণী’ নামে আদর্শগ্রাম গরার কাজ শুরু করেছিলেন। আদর্শগ্রাম গড়ার কাজ শুরু করেছিলেন।
পূর্ববর্তী:
« জ্যোতিরিন্দ্রনাথ নন্দী
« জ্যোতিরিন্দ্রনাথ নন্দী
পরবর্তী:
জ্যোতির্মালা দেবী »
জ্যোতির্মালা দেবী »
Leave a Reply