জ্যোতিভূষণ চ্যাটার্জী (১৬.২.১৯১৯ – ২.৩.১৯৭২) যশোহর। নরেন্দ্রনাথ। ডা. জেবি, চ্যাটার্জী নামে সুপরিচিত। পিতামহ ও পিতা উভয়েই চিকিৎসক ছিলেন। কলিকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এম, বি, (১৯৪২) পাশ করে স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে শোণিত-বিজ্ঞানে গবেষণা করে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. ডি. উপাধি লাভ করেন (১৯৪৯)। ডায়ামরফিক অ্যানিমিয়া সম্পর্কে গবেষণায় আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেন। গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে তার বক্তব্য — ভারতবর্ষের মত দেশে রক্তাল্পতা-ব্যাধির অন্যতম কারণ দারিদ্র্য। ফলে খাদ্যে নিয়মিত পুষ্টির অভাবে এই ব্যাধি হয়। তিনি অত্যন্ত সুলভে এর চিকিৎসার নির্দেশ করেছেন। তার মতে এই রক্তাল্পতা-ব্যাধির সামাজিক কারণও আছে। তীব্ৰ আঁচে রান্না করা এবং বাসনপত্রে লৌহের ব্যবহার কমে যাওয়াও একটি কারণ। তীব্র আঁচে খাদ্যে ভিটামিন বি-১২ ও ফলিক অ্যাসিড নষ্ট হয়ে যায়। এইরূপ অপুষ্টিজনিত রক্তাল্পতার চিকিৎসা হচ্ছে খাদ্যের মধ্যে ঐ গুণ দুটির পরিপূরণ এবং ঔষধের আকারে এগুলির মূল্যও সুলভ করা। তার পক্ষে এই আবিষ্কার বিশ্বের সর্বত্র, বিশেষ করে দরিদ্র দেশের পক্ষে বিশেষ উপযোগী। তার অপর আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আবিষ্কার থ্যালাসেমিয়া নামক রক্ত-সংক্রান্ত ভয়ঙ্কর ব্যাধি সম্পর্কে। কর্মজীবনে তিনি ট্রপিক্যাল স্কুলের ডাইরেক্টর পদে ছিলেন। ১৯৫০ খ্রী. রকফেলার ফাইন্ডেশন ফেলোরূপে আমেরিকায় যান এবং বোস্টনের নিউ ইংল্যান্ড শোণিত-গবেষণা কেন্দ্রে উইলিয়াম ড্যামশেকের সঙ্গে একযোগে ১৫ মাস কাজ করেছেন। সাড়ে তিন শ’র বেশি নিবন্ধ প্ৰকাশ করেন। কোন-কোন নিবন্ধের তিনি যুগ্ম-রচয়িতা ছিলেন। রক্তাল্পতা ছাড়াও আরও বহু বিষয়ে গবেষণা করে উল্লেখযোগ্য নিবন্ধ প্ৰকাশ করেছেন। স্বদেশে ও বিদেশে বহু সম্মানের অধিকারী হন। বহু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন।
পূর্ববর্তী:
« জ্ঞানেশচন্দ্ৰ চট্টোপাধ্যায়
« জ্ঞানেশচন্দ্ৰ চট্টোপাধ্যায়
পরবর্তী:
জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর »
জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর »
Leave a Reply