জ্ঞানেন্দ্রনাথ রায় (১৭-২-১৮৯৭ – ৯-৪-১৯৭০) তিল্লীগ্রাম — ফরিদপুর। পূৰ্ণচন্দ্র। ১৯১৯ খ্রী তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নশাস্ত্ৰে এম-এস-সি-তে প্ৰথম হন। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান কলেজে রসায়ন বিভাগের লেকচারারের পদে যোগদান করে আচার্য প্ৰফুল্লচন্দ্রের তত্ত্বাবধানে জৈব রসায়ন গবেষণা শুরু করেন।
১৯২৩ খ্রী. ভ্ৰমণবৃত্তি নিয়ে ইংল্যাণ্ডে যান ও নোবেল পুরস্কার-বিজয়ী জৈব রসায়ন-বিজ্ঞানী স্যার রবার্ট রবিনসনের অধীনে গবেষণায় রত হন।
১৯২৬ খ্রী. স্যার রবিনসনের সঙ্গে যৌথভাবে তিনি যে গবেষণা-পত্ৰ প্ৰকাশ করেন তা যোজ্যতার আধুনিক ইলেকট্রনিক তত্ত্বের ভিত্তিস্বরূপ। ম্যাঞ্চেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুকাল অধ্যাপনা ও গবেষণা এবং অস্ট্রিয়ার গ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক প্ৰেগলের সঙ্গে মাইক্রো-রসায়ন বিষয়েও গবেষণা করেন।
১৯২৮ খ্রী. ভারতে ফিরে লাহোর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হন। এখানে দীর্ঘকাল অধ্যাপনার পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারত সরকারের আমন্ত্রণে ড্রাগস ও ড্রেসিং দপ্তরের অধিকর্তা হন। এই সময় রণাঙ্গনে প্রয়োজনীয় প্রধান প্ৰধান ভেষজ ও রাসায়নিক দ্রব্য প্ৰস্তুতের কেন্দ্র সারা দেশে গড়ে তোলবার ব্যাপারে বিশিষ্ট ভূমিকা গ্ৰহণ করেন। এরপর ভারত সরকারের শিল্প ও সরবরাহ বিভাগের সহ-অধিকর্তা নিযুক্ত হন এবং ১৯৫১ খ্রী. পর্যন্ত ঐ পদে অধিষ্ঠিত থাকেন। বোম্বাইয়ের টি.সি.এফ, জনউইথ এবং জেফরি ম্যানার্স ভেষজ প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা ছিলেন।
১৯৫৮ খ্রী. ক্যালকাটা কেমিক্যাল-এ প্ৰধান শিল্পও গবেষণা-উপদেষ্টাররূপে যোগদান করে ১৯৬৮ খ্রী. অবসর-গ্ৰহণ করেন। তার রচিত ১৮০টির বেশী মৌলিক গবেষণানিবন্ধ ভারত, ব্রিটেন, আমেরিকা ও জার্মানীর নানা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তিনি ভারতে উপক্ষার সংশ্লেষণ গবেষণায় অন্যতম পথিকৃৎ। এ সম্পর্কে তার একটি কৃতিত্বপূর্ণ অবদান বারবেরিন উপক্ষারের সংশ্লেষণ। আচাৰ্য প্ৰফুল্লচন্দ্রের প্রিয় শিষ্য ‘জ্ঞানত্রয়ে’র তিনি অন্যতম।
Leave a Reply