জ্ঞানেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, ড. (২৩-৪-১৮৯৩ – ১০-৫-১৯৮৩) মহাদেবপুর — রাজশাহী। দুর্গাদাস। রসায়ন বিজ্ঞানের কলয়েড বিভাগের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মৃত্তিকা-বিজ্ঞানী। বর্ধমানের স্কুলে পড়ার সময় বিপ্লবী অনুশীলন দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। ১৯১৫ খ্রী. কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএস-সি, পাশ করেন। প্রেমচাঁদ-রায়চাঁদ বৃত্তি পেয়েছিলেন। ছাত্রাবস্থায় লিখিত তার প্রথম কোলাইড সংক্রান্ত গবেষণা পত্রটি ১৯১৫ খ্রী. আমেরিকান সোসাইটির জার্নালে প্ৰকাশিত হয়। অধ্যাপক হিসাবে পেয়েছিলেন আচার্য প্ৰফুল্লচন্দ্র রায়, জগদীশচন্দ্ৰ বসু, শ্যামাদাস মুখোপাধ্যায়, নীলরতন ধর, সুবোধচন্দ্ৰ মহলানবিশ প্রভৃতিকে। সহপাঠী ছিলেন সত্যেন্দ্রনাথ বসু, মেঘনাথ সাহা, প্রশান্ত মহলানবিশ, প্ৰাণকৃষ্ণ পারিজা প্রভৃতি — উত্তরকালের দিকপাল বিজ্ঞানীরা। ১৯১৯ খ্রী. তিনি ও জ্ঞানচন্দ্ৰ ঘোষ লণ্ডন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ভৌত রসায়ন বিভাগে গবেষণার কাজে যোগ দেন। লণ্ডনের ফ্যারাডে সোসাইটি ও ফিজিক্যাল সোসাইটির যুক্ত উদ্যোগে এক আলোচনাচক্রে ‘ওরিজিন অ্যান্ড নিউট্রালাইজেশন অব দি চার্জ অব কোলাইডস’ সম্পর্কে এক গবেষণাপত্র পড়ে বিখ্যাত হয়ে পড়েন। ১৯২৪ খ্ৰী-ব প্ৰতিষ্ঠিত ইন্ডিয়ান কেমিক্যাল সোসাইটির সভাপতি ছিলেন আচাৰ্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, আর তিনি ছিলেন তার সম্পাদক। দশের দশকে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞানের স্নাতকোত্তর শ্রেণী খোলা হলে সেখানে পঠন-পাঠনের দায়িত্ব যে মেধাবী তরুণদের উপর পড়ে তিনি তার মধ্যে অন্যতম ছিলেন। ক্যালকাটা স্কুল অব সয়েল সায়েন্স তার হাতে গড়ে ওঠে। ১৯৩৪ খ্রী. তার সভাপতিত্বে দি ইণ্ডিয়ান সোসাইটি অব সয়েল সায়েন্স প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি ছিলেন ইন্ডিয়ান কেমিক্যাল সোসাইটির স্রষ্টা এবং ইন্ডিয়ান এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর। ইউরোপ, আমেরিকা ও কানাডা সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিজ্ঞানী হিসাবে খ্যাতি লাভ করেন। কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞান বিষয়ক বহু কমিটির তিনি মধ্যমণি ছিলেন। ১৯৫৪ খ্রী. পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পরিচালক নিযুক্ত হন। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডিলিট উপাধি দেয়। মৃত্তিকা বিজ্ঞানে তার অবদানের জন্য তাকে পদ্মভূষণ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
পূর্ববর্তী:
« জ্ঞানেন্দ্রনাথ দাস
« জ্ঞানেন্দ্রনাথ দাস
পরবর্তী:
জ্ঞানেন্দ্রনাথ রায় »
জ্ঞানেন্দ্রনাথ রায় »
Leave a Reply