জোনস, উইলিয়ম, স্যার (২৮.৯.১৭৪৬ – ২৭.৪.১৭৯৪) ইংল্যাণ্ড। অক্সফোর্ডে ছাত্রাবস্থায় প্ৰাচ্যভাষা শিখতে আরম্ভ করেন। ১৭৭০ খ্রী. ফারসী ভাষায় লিখিত নাদির শাহেব জীবনী ফরাসী ভাষায় অনুবাদ করেন। পরের বছর ফারসী ভাষার ব্যাকরণ লেখেন। অল্পকাল পরে একখানি আরবী গ্রন্থেরও অনুবাদ করেন। ক্রমে জোনস প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বহু ভাষায় পারদর্শী হন। ১৭৮৩ খ্রী. সুগ্ৰীম কোর্টের বিচারক পদে নিযুক্ত হয়ে কলিকাতায় আসেন। পরের বছর কলিকাতায় এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠা করেন এবং আজীবন তার সভাপতির পদে ছিলেন। ‘সমগ্র এশিয়ার যা কিছু মানুষের কীর্তি ও প্রকৃতির সৃষ্টি সে-সব বিষয়ে গবেষণা করাই এই সোসাইটির কাজ’-এইভাবে তিনি সোসাইটির উদ্দেশ্য ব্যক্ত করেন। এই মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে জীবনের ১০ বছর কঠোর পরিশ্রম করেন এবং বহু মনীষীকে এই কাজে প্রেরণা যোগান। সোসাইটির তৃতীয় বার্ষিক অধিবেশনে (১৭৮৬) সভাপতি জোনস হিন্দু জাতির ইতিহাস ও সভ্যতা সম্পর্কে যে ভাষণ দেন তাতে তিনি সংস্কৃত ভাষার সঙ্গে গ্ৰীক, ল্যাটিন, গথিক, কেলটিক প্রভৃতি ইউরোপীয় ভাষার প্রকৃতিগত সাদৃশ্যের উল্লেখ করে বলেন যে এই সমুদয় ভাষা এবং প্রাচীন ফারসী ভাষা এক মূল ভাষা থেকে উৎপন্ন হয়েছে। তিনি বহু সংস্কৃত গ্রন্থের ইংরেজী অনুবাদ করেন। তার মধ্যে ‘শকুন্তলা’, ‘হিতোপদেশ’, ও জয়দেবের ‘গীতগোবিন্দ’ বিশেষ উল্লেখযোগ্য। প্ৰথম চার বছরে এশিয়াটিক সোসাইটির মুখপত্ৰ ‘এশিয়াটিক রিসার্চেস’-এ বিভিন্ন বিষয়ে তার ২৯টি প্ৰবন্ধ প্ৰকাশিত হয়, যথা : ‘রোমান অক্ষরে সংস্কৃত লিখন পদ্ধতি’, ‘গ্ৰীস, ইটালী ও ভারতের দেবদেবী’, ‘হিন্দুরাজগণের কালক্ৰম’, ‘হিন্দু সঙ্গীত’, ‘জ্যোতিষ ও সাহিত্য’ এবং ‘প্রাণিবিদ্যা’, ‘উদ্ভিদবিদ্যা, ‘আয়ুৰ্বেদ’ প্রভৃতি। কলিকাতায় সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল গির্জায় তার স্মৃতিস্তম্ভ আছে।
পূর্ববর্তী:
« উইলিয়ম কেরী
« উইলিয়ম কেরী
পরবর্তী:
উইলিয়ম হপকিন্স পিয়ার্স »
উইলিয়ম হপকিন্স পিয়ার্স »
Leave a Reply