জীবনলাল চট্টোপাধ্যায় (১৯.৩.১৮৮৯ – ১.১২.১৯৭০) পাত্রসার—ঢাকা। জানকীনাথ। কলিকাতার শ্ৰীকৃষ্ণ পাঠশালা থেকে ম্যাট্রিক পাশ করে বঙ্গবাসী কলেজে আইএস-সি–পড়তে এসে রাজনীতিতে যোগ দিয়ে পড়া ছাড়েন।
১৯০৭ খ্রী. ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে প্রমাণাভাবে মুক্তি পান। আলীপুর বোমা মামলার পর বাঘা যতীনের সংস্পর্শে আসেন। ইন্দো-জার্মান ষড়যন্ত্রে অংশ নিয়ে ১৯১৬ খ্রী. পর্যন্ত আত্মগোপন করেন। পরে ধরা পড়েন। ১৯২০ খ্ৰী. মুক্ত হন। এরপর মুন্সীগঞ্জে ১৯২১ খ্ৰী. ন্যাশনাল স্কুল প্রতিষ্ঠা করে সেখানে শিক্ষকতা করেন এবং দেশবন্ধুর স্বরাজ্য দলে যোগ দেন। নেতাজী সুভাষচন্দ্র তার কাছে বর্মী ভাষায় প্রথম পাঠ নেন। ১৯২৩ খ্ৰী. পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে ১৯২৪ খ্রী. আরও কয়েকজনের সঙ্গে ব্ৰহ্মদেশের জেলে সরিয়ে দেয়। বেসিন জেল থেকে তিনি ভূপেন্দ্ৰকুমার দত্তের সাহায্যে ‘State Prisoneer’s Memorial to White Hall’ প্রেরণ করেন। স্বাস্থ্যের কারণে ১৯২৮ খ্রী. মুক্তি পান।
১৯৩০ খ্রী. আইন অমান্য আন্দোলনে নেতা ও বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসের সম্পাদক হন। ১৯৩০-৩৩ বন্দী থাকেন। ১৯৩৮ খ্রী. কলিকাতায় এম.এন. রায়ের সংস্পর্শে এসে কম্যুনিস্ট আন্দোলনে আকৃষ্ট হন। ১৯৪০ খ্রী. রামগড় কংগ্রেসে বিপ্লবী প্ৰস্তুতির কথা বলার জন্য কংগ্রেস ত্যাগ করে ‘লীগ অফ র্যাডিক্যাল কংগ্রেসে’ যোগ দেন। মতানৈক্যের ফলে ১৯৪১ খ্ৰী লীগ ত্যাগ করে মানবেন্দ্রনাথ রায়ের ‘ডেমোক্র্যাটিক ভ্যানগার্ড পার্টি’তে যোগ দিয়ে সক্রিয় হন। পরে এই দল ছেড়ে ‘র্যাডিক্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি’ গঠন করেন। এই দলই ১৯৬০ খ্ৰী. প্রতিষ্ঠিত ‘অল ইন্ডিয়া ওয়ার্কার্স পার্টি’র ভিত্তিস্থাপনে সহায়তা করে। তিনি তার সভাপতি ছিলেন। ‘নবীন বাংলা’ ও ‘গণবিপ্লব’ পত্রিকার সম্পাদক হন। ‘উদরের চিন্তা’ ও ‘সাম্প্রদায়িকতার গ্লানি’ তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য পুস্তিকা। তার অনুজ বাদল (প্ৰফুল্ল ১৯০৫-১৯৮১) একজন বিশিষ্ট বিপ্লবী কর্মী ছিলেন।
Leave a Reply