জিতেন্দ্রনাথ কুশারী (১৮৯৩ – ২৪.২.১৯৬৬) বাহেরক-ঢাকা। ময়মনসিংহের বিন্ধ্যবাসিনী স্কুল থেকে ১৯০৯ খ্ৰী. এন্ট্রান্স পাশ করে কিছুদিন গোয়ালন্দ স্টীমার কোম্পানীতে কাজ করেন। বরিশাল ব্ৰজমোহন কলেজ থেকে এফ.এ. ও বিএ (১৯১৬) পাশ করে কিছুদিন বিভিন্ন স্থানে শিক্ষকতা করেন। ছাত্রজীবন থেকে বিপ্লবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নোয়াখালিতে ভারত রক্ষা বিধানে গ্রেপ্তার হয়ে খুলনা জেলায় অন্তরীণ থাকেন। ১৯১৯ খ্রী. মুক্তি পেয়ে শিক্ষাগত যোগ্যতা গোপন করে কলিকাতা শ্ৰীগৌরাঙ্গ প্রেসে কম্পোজিটারের কাজ শেখেন এবং শ্যামসুন্দর চক্রবর্তীর ‘সারভেন্ট’ পত্রিকায় সহকারী প্রেস ম্যানেজার হন। অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়ে ১৯২১ খ্রী. স্বগ্রামে ফিরে যান ও ‘সিদ্ধেশ্বরী জাতীয় বিদ্যালয়’ স্থাপন করে প্রধান-শিক্ষকের কাজ করতে থাকেন। এই সময়ে সত্যাগ্ৰহ আন্দোলনে যোগ দিয়ে কারাদণ্ড ভোগ করেন।
১৯২৩ খ্রী. ‘বাহেরক সত্যাশ্রম’ প্ৰতিষ্ঠা করে ১৯২৯ খ্রী. পর্যন্ত প্ৰতি বছর বিক্রমপুর জাতীয় প্রদর্শনী করে গেছেন। ১৯২৮ খ্রী. বেঙ্গল ইন্সিওরেন্স এন্ড রয়্যাল প্রপার্টি লিঃ-এর অর্গানাইজার নিযুক্ত হয়ে রংপুরে যান। ১৯৩০ ও ১৯৩২ খ্রী. আন্দোলনে যোগ দিয়ে কারারুদ্ধ হন। ১৯৩৫ খ্ৰী. মুক্তিলাভের পর একটি ব্যবসায়-প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। ১৯৩৭ খ্রী. ঢাকা রাষ্ট্ৰীয় (জেলা) সমিতির সভাপতি হন। ১৯৪২ খ্ৰী ‘ভারত-ছাড়’ আন্দোলন-কালে নিরাপত্তা আইনে বন্দী হন। ১৯৪৮ ও ১৯৪৯ খ্রী. শান্তিনিকেতন এবং সেবাগ্রামে অনুষ্ঠিত বিশ্বশান্তি সম্মেলনে প্ৰতিনিধিরূপে উপস্থিত থাকেন। ১৯৫০ খ্রী বরাবরের জন্য পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন। কলিকাতায় ‘স্বরাজ’ পত্রিকার সম্পাদনা ও কোন্নগর নবগ্রামে শিক্ষকতা করেন। কিছুদিন ধুবুলিয়া ক্যাম্পের কমান্ড্যান্ট ছিলেন। ‘পথের সন্ধানে’ ও ‘গান্ধীজী স্মরণে’ দুটি গ্রন্থ ও বহু প্ৰবন্ধ এবং পুস্তিকা রচনা করেন। সুবক্তা ও সুগায়ক ছিলেন।
Leave a Reply