চুনীলাল বসু, ডাঃ, রায়বাহাদুর,সি.আই.ই. (১৩.৩.১৮৬১ – ৩.৮.১৯৩০) কলিকাতা। কৌলিক নিবাস চাংড়িপোতা-চব্বিশ পরগনা। দীননাথ। প্রসিদ্ধ চিকিৎসক ও অধ্যাপক। ছাত্রজীবনে একাধিক পরীক্ষায় বৃত্তি, পুরস্কার ও পদক লাভ করেন। ১৮৮৬ খ্রী. কলিকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে অনার্স সহ এম,বি, পাশ করে প্রথমে মেডিক্যাল কলেজে সহকারী সার্জেন পদে যোগ দিয়ে কিছুদিন ব্ৰহ্মদেশে বাস করেন। পরে বাঙলা সরকারের প্রধান রসায়ন-পরীক্ষক নিযুক্ত হন (১৮৮৯–১৯২০)। ভারতীয়দের মধ্যে তিনিই প্ৰথম রসায়নের অধ্যাপক পদ পান (১৮৯৮)। রসায়ন বিভাগে কাজ করার সময় তিনি বাঙলায় প্রচলিত খাদ্যদ্রব্যের যে রাসায়নিক বিশ্লেষণ করেন তার ফলে ভারতের পূর্বাঞ্চলের ব্যাপক অপুষ্টির কারণ ব্যাখ্যা করা সহজ হয়েছে। করবী ফুলের রাসায়নিক ক্রিয়া ও বিষক্রিয়ার বিশ্লেষণ তার একটি উল্লেখযোগ্য গবেষণা। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞানশিক্ষার জন্য তার প্রচেষ্টা বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ১৮৯৪ খ্রী. অনুষ্ঠিত সারা ভারত চিকিৎসক সম্মেলনের সহসভাপতি,, ১৮৯৮ খ্রী. কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো, ১৯০১ খ্রী. স্থাপিত ক্যালকাটা মেডিকাল ক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ‘ইণ্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দি কালটিভেশন অফ সায়েন্স’-এর সহ-সভাপতি, কলিকাতার শেরিফ (১৯২১), ইংল্যাণ্ডের রসায়ন সঙ্ঘের সদস্য ও বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সহ-সভাপতি ছিলেন। কলিকাতা অন্ধ বিদ্যালয় ও অনাথ আশ্রম তার পরিচালনায় উন্নতিলাভ করেছিল। বাংলায় রচিত তার বিজ্ঞানগ্রন্থ ‘ফলিত রসায়ন’, ‘রসায়নসূত্র’ (২ খণ্ড), ‘জল’, ‘বায়ু’, ‘খাদ্য’, ‘আলোক’, ‘শরীর-স্বাস্থ্য-বিধান’, ‘পল্লী-স্বাস্থ্য’, ‘স্বাস্থ্য-পঞ্চক’ প্রভৃতি প্ৰত্যেকটিই সুখপাঠ্য। ইংরেজী ভাষায়ও প্ৰথম শ্রেণীর বৈজ্ঞানিক প্ৰবন্ধকার। ইংরেজী গ্রন্থের সংখ্যা ১২টি। ‘পুরী যাইবার পথে’ তার একটি রম্য রচনা। কলিকাতা মেডিক্যাল জার্নালের সম্পাদক ছিলেন। কাশীর ধর্ম মহামণ্ডল তাকে ‘রসায়নাচাৰ্য’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তার পুত্র জ্যোতিঃপ্রকাশ কলিকাতা স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে বহুমুত্ররোগ নিয়ে গবেষণা করে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। পৌত্র অজিতকুমার ডাক্তার হিসাবে সারা ভারতে পরিচিত।
পূর্ববর্তী:
« চিহিল গাজী
« চিহিল গাজী
পরবর্তী:
চেরাগ আলী শাহ্ »
চেরাগ আলী শাহ্ »
Leave a Reply