চারু রায় (৬.৯.১৮৯০ – ২৮.৯.১৯৭১) বহরমপুর। আদি নিবাস-পাবনা। শ্যামাচরণ। ১৯১১ খ্রী. বহরমপুর থেকে ম্যাট্রিক ও ১৯১৮ খ্ৰী. কলিকাতা প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে বিএস-সি. পরীক্ষা পাশ করেন। ছোটবেলা থেকেই চিত্ৰকলানুরাগী ছিলেন। বহরমপুরে ভাস্কর ব্রজ পালের কাছে চিত্রকলা বিষয়ে শিক্ষাগ্ৰহণ করেন। স্নাতক হয়ে চিত্রকলায় মনোনিবেশ করেন ও ইণ্ডিয়ান সোসাইটি অফ ওরিয়েণ্টাল আর্টের সঙ্গে যুক্ত হন এবং অঙ্কিত ছবি প্ৰকাশ করতে থাকেন। কিন্তু চিত্রকলায় অর্থাগম না হওয়ায় বার্ড কোম্পানীতে চাকরি নেন। এই সময়ে তিনি ‘ভারতী’ পত্রিকা অফিসের সাহিত্যিক ও গুণিজনের আসরের অন্যতম সভ্য ছিলেন। ১৯২২ খ্রী. আনন্দবাজার পত্রিকায় যোগদান করেন। কিছুদিন সম্পাদকীয় বিভাগে কাজ করার পর দৈনিক বাংলা পত্রিকায় ব্যঙ্গচিত্রাঙ্কন শুরু করেন। ১৯২২–২৭ খ্রী. পর্যন্ত ‘সি-আর’ নামে অঙ্কিত ছবিগুলির মাধ্যমে বাঙলাদেশে বিখ্যাত ব্যঙ্গচিত্রশিল্পিীরূপে পরিচিত ও সমাদৃত হন। তিনিই প্রথম বাংলা হরফগুলির ‘ডেকারেটিভ’-রূপ দান করেন। রঙ্গমঞ্চের সঙ্গেও তার সংযোগ ছিল। ‘মুক্তার মুক্তি’ নাটকে শিল্প-নির্দেশকরূপে খ্যাতি অর্জন করেন। শিশিরকুমার ভাদুড়ীর ‘সীতা’ নাটকের তিনি শিল্প-নির্দেশক ছিলেন। এ ছাড়া ‘ঋষির মেয়ে’ ও ‘শ্ৰীকৃষ্ণ’ নাটকের শিল্প-নির্দেশনা দেন। ১৯২৫ খ্রী. আত্মীয় ও সহপাঠী হিমাংশু রায়ের আহ্বানে লাইট অফ এশিয়ার শিল্প-নির্দেশকারূপে চলচ্চিত্র জগতে প্ৰবেশ করেন। পরবর্তী ‘সিরাজ’ ছবির শিল্প-নির্দেশক ও অভিনেতা, ১৯২৮ খ্রী ‘এ থ্রো অফ এ ডাইস’ ছবির নায়ক এবং ১৯২৯ খ্রী. ‘লাভস অফ এ মোগল প্রিন্স’ ছবির পরিচালক হন। তার পরিচালিত অন্যান্য ছবি : ‘বিগ্ৰহ’, ‘চোরকাটা’, ‘স্বামী’, ‘কিংবদন্তী’, ‘পথিক’, ‘ডাকু কা লেড়কী’ প্রভৃতি। তার অভিনীত ছবিগুলিতে তার স্ত্রী মায়াদেবীও অভিনয় করতেন। তিনি প্ৰথম বাংলা চলচ্চিত্ৰ-বিষয়ক পত্রিকা ‘বায়স্কোপ’-এর সম্পাদক ছিলেন।
পূর্ববর্তী:
« চারু মাস্টার (চাকমা)
« চারু মাস্টার (চাকমা)
পরবর্তী:
চারুচন্দ্র ঘোষ »
চারুচন্দ্র ঘোষ »
Leave a Reply