চণ্ডীচরণ সেন (২৭.১.১৮৪৫ – ১০.৬.১৯০৬) বাসণ্ডা-বাখরগঞ্জ। নিমচাঁদ। ১৮৬৩ খ্রী. বরিশাল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এন্ট্রান্স পাশ করে কলিকাতায় ফ্রি চার্চ ইনস্টিটিউশনে (ডাফ কলেজ) কিছুদিন অধ্যয়ন করে অসুস্থতার জন্য বরিশাল ফিরে যান। পরে ১৮৬৯ খ্ৰী. কলিকাতায় এসে গৃহশিক্ষকতা করে আইন পরীক্ষা পাশ করেন। পাঠ্যাবস্থায় রামতনু লাহিড়ী, দুৰ্গামোহন দাস প্রমুখ ব্ৰাহ্ম নেতাদের সংস্পর্শে আসেন। ১৮৭০ খ্রী. বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর কাছে ব্ৰাহ্মধর্মে দীক্ষাগ্ৰহণ করেন। কিছুদিন বরিশালে আইন ব্যবসায় করেন। ১৮৭৩ খ্রী. সরকারি কর্মচারী হিসাবে প্ৰথমে মুন্সেফ ও শেষে সাবজজ পদ প্ৰাপ্ত হন এবং বিচারপতিরূপে কৃতিত্বের পরিচয় দেন। সাহিত্য-ক্ষেত্রেও কৃতিমান ছিলেন। ‘টম কাকার কুটীর’ তাঁর বিখ্যাত অনুবাদ-গ্ৰন্থ। তা ছাড়া ‘অযোধ্যার বেগম’, ‘ঝাঁসীর রাণী, ‘ দেওয়ান গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ’ ইত্যাদি গ্রন্থে তিনি ইংরেজ অধিকারের প্রথম অবস্থার ঘটনাবলীর নিভীকি তথ্যনির্ভর বিবরণ দিয়ে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করেন। ‘মহারাজা নন্দকুমার’-গ্ৰন্থ রচনার জন্য সরকার কর্তৃক দণ্ডিত হন। একসময়ে এইসব ঐতিহাসিক উপন্যাস দেশবাসীর মনে জাতীয় ভাব-সঞ্চারে প্রভূত সাহায্য করেছিল। তার দর্শনের পুস্তক ‘জীবনগতি নির্ণয়’। ‘লঙ্কাকাণ্ডং’ নামে একটি বিদ্রুপাত্মক কাব্যও তিনি রচনা করেছিলেন। ‘মুদ্রাযন্ত্রের স্বাধীনতা প্ৰদাতা’, ‘এই কি রামের অযোধ্যা’ তার অপর দুটি গ্রন্থ। ১৯০৩ খ্রী. তার শেষ উপন্যাস টলস্টয় অবলম্বনে ‘চল্লিশ বৎসর’ প্রকাশিত হয়। খ্যাতনাম্নী মহিলা কবি কামিনী রায় তার জ্যেষ্ঠা কন্যা।
পূর্ববর্তী:
« চণ্ডীচরণ লাহা
« চণ্ডীচরণ লাহা
পরবর্তী:
চণ্ডীদাস »
চণ্ডীদাস »
Leave a Reply