গোবিন্দপ্ৰসাদ সিংহ (৯.২.১২৯৬ – ১.৯.১৩৬১ বঙ্গাব্দ) কনেমারা (বর্তমান গোবিন্দরাম)-বাঁকুড়া। দিবাকর। বিষ্ণুপুর রাজশক্তির অধীন রাজপুত ক্ষত্রিয় ভূম্যধিকারী অর্জন সিংহ তার পিতামহ। স্বাধীনতা সংগ্রামী ও গান্ধীশিষ্য। ১৯১১ খ্রী. হিন্দু স্কুল থেকে বৃত্তি নিয়ে প্ৰবেশিকা ও ১৯১৩ খ্রী. বাঁকুড়া ক্রিশ্চান কলেজ থেকে আই.এ. পাশ করেন। বি.এ. পাশ করার সময় শ্ৰীশ্ৰীমা সারদামণির কাছে দীক্ষা নিয়ে দুৰ্ভিক্ষত্ৰাণের কাজে আত্মনিয়োগ করে পড়াশোনা ছাড়েন। ১৯১৭ খ্রী. বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাঁটি স্কুলের প্রধান-শিক্ষক নিযুক্ত হন। গান্ধীজীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি বিদ্যালয়টিকে জাতীয় বিদ্যালয়ের রূপ দেন-(মার্চ, ১৯২১ খ্রী)। ১৯২১ খ্রী জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মনোনীত হন। এরপর প্রধান-শিক্ষকের পদ ছেড়ে কংগ্রেসের সংগঠনমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত হন। সেবাকর্মী অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে মাছরাঙার জঙ্গল কেটে ১৯২৪ খ্রী. গড়ে তোলেন ‘অমরকানন’ শিক্ষা ও কর্মপ্রতিষ্ঠান। গঙ্গাজলঘাঁটি জাতীয় বিদ্যালয় এখানে স্থানান্তরিত হয়। চিত্তরঞ্জন দাশ ঐ বিদ্যালয়টিকে জাতীয় বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দেন। চিত্তরঞ্জনের মৃত্যুর অব্যবহিত পরে গান্ধীজী বাঁকুড়ায় এসে অমরকাননের শ্ৰীশ্ৰীরামকৃষ্ণ আশ্রমের দ্বারোদঘাটন করেন (১৯২৫)। পরবর্তী কালে অমরকানন বাঁকুড়া ও পার্শ্ববতী বর্ধমানের স্বাধীনতা আন্দোলনের পীঠস্থানে পরিণত হয়। একসময় ইংরেজ সরকারের বিষদৃষ্টি পড়েছিল এর উপর এবং ১৯৩০ – ৩১ খ্রী. ইংরেজ সরকার ঐ আশ্রম ও আশ্রমিকদের উপর যথেষ্ট অত্যাচার করে। দেশ স্বাধীন হবার পর তার অনুরোধে মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায় এই অমরকানন ব্লক থেকেই ম্যালেরিয়া দূরীকরণ কর্মসূচী প্রথম রূপায়িত করেন। ১৯৩০ ও ১৯৩২ খ্রী. আইন অমান্য আন্দোলনে ও ১৯৪২ খ্রী. ‘ভারত-ছাড়’ আন্দোলনে যোগ দিয়ে কারারুদ্ধ হন। ‘আদিবাসী কল্যাণ কেন্দ্র’ এবং ‘অমর কানন দেশবন্ধু বিদ্যালয়’-এর প্রতিষ্ঠাতা অকৃতদার গোবিন্দপ্রসাদ সকলের কাছে ‘মাস্টার মশায়’ আখ্যায় সম্মানিত ছিলেন।
পূর্ববর্তী:
« গোবিন্দপ্ৰসাদ রায়
« গোবিন্দপ্ৰসাদ রায়
পরবর্তী:
গোবিন্দরাম মিত্র »
গোবিন্দরাম মিত্র »
Leave a Reply