গোবর গুহ (১৩.৩.১৮৯২ – ৩.১.১৯৭২) কলিকাতা। রামচরণ। প্রকৃত নাম যতীন্দ্রচরণ। গুহ পরিবার বংশ-পরম্পরায় বাঙালীদের ব্যায়ামচৰ্চায় লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করেছেন। প্রপিতামহ থেকে কুস্তির আখড়া চলছে। পূর্বসূরীদের মধ্যে অম্বুবাবু ও ক্ষেত্রবাবুর (বিবেকানন্দ তার কাছে কুস্তি শেখেন) নাম ব্যায়াম-শিক্ষকগণ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি সতের বছর বয়সে বিদ্যাসাগর স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাশ করেন। ব্যায়াম-চৰ্চা শুরু হয় পিতৃব্য অম্বিকাচরণের কাছে। পিতার কাছেও কিছুদিন শিক্ষা করেন। তারপর গুহ-বাড়ির মাহিনা-করা ভারত-বিখ্যাত পালোয়ান খোলসা চোবে, রহমনী পালোয়ান প্রভৃতির শিক্ষায় তাঁর নাম শৌখিন পালোয়ান-মহলে ছড়িয়ে পড়ে। ৬’ ১” লম্বা, ৪৮” ছাতি ও ২৯০ পাউন্ড ওজনের এই বঙ্গবীরের পেশাদারী কুস্তিতে অভিজ্ঞতা শুরু হয় ১৯১০ খ্ৰীষ্টাব্দে। প্রথমে ত্রিপুরার মহারাজার পোষ্য পালোয়ান নওরঙ সিং-এর সঙ্গে লড়লেও অর্থগ্রহণ করেন নি। এই বছরই ভিনিস ও সুইজারল্যান্ড হয়ে তিনি ইংল্যান্ড সফর করে দেশে ফেরেন। ১৯১২ খ্রী. পুনরায় ইউরোপ সফরে যান এবং ১৯১৫ খ্রী দেশে ফেরেন। তারপর ১৯২০ খ্রী. তৃতীয়বার ইউরোপ যান এবং সাড়ে ছ’ বছর ইউরোপ ও আমেরিকার দেশে দেশে ঐ দেশীয় কুস্তি-চ্যাম্পিয়নদের পরাজিত করে বিপুল যশ ও অর্থলাভ করেন। ২৪ আগস্ট ১৯২১ খ্ৰী. তিনি পৃথিবীর তৎকালীন লাইট হেভি ওয়েট চ্যাম্পিয়ন অল স্যান্টালকে সানফ্রানসিসকো শহরে পরাজিত করে পৃথিবীর লাইট হেভি ওয়েট চ্যাম্পিয়ন আখ্যা লাভ করেন। ১৯২৯ খ্রী. পার্কসার্কাস কংগ্রেস মণ্ডপে ছোট গামার সঙ্গে তার যে লড়াই হয় তাতে তিনি পরাজিত হন। তিনি তাঁর নিজস্ব ঘরানার প্যাঁচ-লুকানোর ধোঁকা, টিব্বি, গাধানেট, ঢাক, টাং, কুল্লা প্রভৃতিতে সিদ্ধ ছিলেন। ৫২ বছর বয়সে তিনি প্ৰতিযোগিতার ক্ষেত্ৰ থেকে অবসর-গ্ৰহণ করেন। পুত্ৰ মানিক ও ছাত্র বনমালী ঘোষ তার উপযুক্ত শিষ্য।
পূর্ববর্তী:
« গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়
« গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়
পরবর্তী:
গোবর্ধন আচাৰ্য »
গোবর্ধন আচাৰ্য »
Leave a Reply