কালিন্দী রাণী (১৮০০? – ১৮৭৩) পার্বত্য চট্টগ্রাম। গুজাং। চাকমা রাজা ধরম বক্স মৃগয়া করতে গিয়ে তাকে বিবাহ করেন। ১৮৩২ খ্রী. স্বামীর মৃত্যুর পর ব্রিটিশ সরকারের সাথে দরবার করে ১৮৩৭ খ্ৰী-দু’বছরের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের ইজারা নেন। নতুন রাজ্যে ব্রিটিশ অধিকার স্থায়ী করতে ও প্রাধান্য বিস্তার করার উদ্দেশ্যে ১৮৪৪ খ্ৰী তাকে তাঁর মৃত স্বামীর যাবতীয় সম্পত্তির সরবরাহকারিণী সাব্যস্ত করা হয়। কিন্তু প্ৰজাবৎসল রাণী স্বাধীনভাবে রাজ্যশাসনে উদ্যোগী ছিলেন। ফলে উভয়ের মধ্যে স্বার্থের সংঘাত দেখা দেয়। প্রকৃতপক্ষে তার সময়েই সক্রিয়ভাবে এই জেলায় ব্রিটিশ শাসনের সূত্রপাত। অবশ্য লুসাই অভিযানে এবং সিপাহীবিদ্রোহ দমনে রাণী ব্রিটিশকে বিশেষভাবে সাহায্য করে কিছু সুবিধা আদায় করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তার আমলেই সর্বপ্রথম চাকমা অধূষিত অঞ্চলে বাংলা ভাষা প্রসার-লাভ করে এবং বহুদিন পরে সরকারী কাৰ্যালয়ে ফারসীর স্থলে ইংরেজী চালু হয়। ১৮৫৭ খ্রী. তান্ত্রিক বৌদ্ধধর্মাবলম্বী রাণী কালিন্দী মহাথের-এর কাছে থেরবাদে দীক্ষা নেন। তার সাহায্যে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা থেরবাদের প্রচার করতে সক্ষম হয়েছিলেন। প্রচারের উদ্দেশ্যে তিনি ‘যাদুত্তোয়াং’-এর বঙ্গানুবাদ ‘বৌদ্ধ রঞ্জিকা’ ছাপানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। ১৮৬৭ খ্রী. রাজানগরে আরাকানের অনুকরণে তিনি বিখ্যাত ‘মহামুনি’ মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। হিন্দুদের জন্য মন্দির এবং মুসলমানদের জন্য মসজিদও করে দিয়েছেন।
পূর্ববর্তী:
« কালিদাস রায়
« কালিদাস রায়
পরবর্তী:
কালী মির্জা »
কালী মির্জা »
Leave a Reply