কমলকুমার মজুমদার (১৯১৫–৭৭২-১৯৭৯) টাকী-চব্বিশ পরগনা। প্ৰফুল্লকুমার। সাহিত্যিক, শিল্পী। তাঁর প্রধান গল্প : ‘নিম অন্নপূর্ণা’, ‘শ্যাম নৌকা’, ‘গোলাপ সুন্দরী’, ‘সুহাসিনীর পমেটম’ প্রভৃতি। ‘অন্তর্জলি যাত্রা’, ‘পিঞ্জরে বসিয়া সুখ’, ‘খেলার প্রতিভা’ তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। তিনি প্রধানত লিখতেন ‘এক্ষণ’, ‘কৃত্তিবাস’ ও অন্যান্য লিটল ম্যাগাজিনে। যদিও তাঁর রচনা খুব বেশী পাঠকের কাছে পরিচিত ছিল না, তবু তাঁর গল্প-উপন্যাসের বিশিষ্ট ভাষা নিয়ে সাহিত্যিক মহলে অনেক তর্কবিতর্ক ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। তার ভাষা আপাতকঠিন হলেও শব্দসৌন্দর্যে ও গভীরতায় অনেক তরুণ লেখককে আকৃষ্ট করেছিল। ফরাসী সাহিত্যে বিদগ্ধ ছিলেন। অন্যদিকে মিনিয়েচার চিত্ৰণ, পুস্তক অলঙ্করণ, বাংলা হরফ নির্বাচন ও মুদ্ৰণ-বিষয়ে দক্ষ ছিলেন। তাছাড়া বাঙলার সাবেকী লোকশিল্প, কুটিরশিল্প, ধাতুশিল্প ও দারুশিল্প এবং বাঙলার মঠ ও মন্দির-বিষয়ক বিভিন্ন দিকেও তার অধিকার ছিল। ‘আইকম বাইকম’ নামে তাঁর ছড়ার সংকলনে তিনি নিজেই চিত্রাঙ্কন ও অলঙ্করণের কাজ করেন। তার অপর ছড়ার বই দীর্ঘকাল সাউথ পয়েন্ট স্কুলে শিল্পকলা-বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন। বাংলা নাটক অভিনয়ের ব্যাপারেও তার আগ্রহ ছিল। নিজে দল গঠন করিয়েছেন। ‘দানসা ফকির’ তাঁর নাট্যগ্রন্থ। শেষের দিকে বস্তির ছেলেমেয়েদের নিয়ে নাটক অভিনয়ের তালিম দিতেন। ‘হরবোলা’ নাট্যগোষ্ঠীর নাট্যপরিচালক ছিলেন। ‘অঙ্কভাবনা’ নামে একটি গণিতের সাময়িক পত্রিকা-প্রকাশেও তিনি ব্ৰতী হয়েছিলেন। ১৯৫১ খ্রী. এবং ১৯৬১ খ্রী. সেন্সাস কমিশনে কাজ করেছেন। তাঁর ভাইবোনদের মধ্যে শিল্পী নীরদ মজুমদার ও শানু লাহিড়ী সুপরিচিত।
পূর্ববর্তী:
« কমল দাশগুপ্ত
« কমল দাশগুপ্ত
পরবর্তী:
কমলকৃষ্ণ সিংহ, রাজা »
কমলকৃষ্ণ সিংহ, রাজা »
Leave a Reply