ইন্দ্ৰনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় (১৪-৫-১৮৪৯—২৩-৩-১৯১১) গঙ্গাটিকুরি-বর্ধমান। পিতা বামাচরণ পূৰ্ণিয়ার উকিল ছিলেন। ১৮৬৯ খ্রী. ক্যাথিড্রাল মিশন কলেজ থেকে বি-এ পাশ করে বীরভূমের হেতমপুর ও বর্ধমানের ওকড়সা স্কুলে প্রধান শিক্ষকের কাজ করেন। ১৮৭১ খ্ৰী. বি. এল. পাশ করে পূৰ্ণিয়ায়, দিনাজপুরে, কলিকাতা হাইকোর্টে, অবশেষে আমৃত্যু বর্ধমানে ওকালতি করে গেছেন। কিছুদিনের জন্য মুন্সেফের কাজও করেছেন। বাংলা সাহিত্যজগতে ‘পাচু ঠাকুর বা ‘পঞ্চানন্দ’ নামে প্রতিষ্ঠিত হন। বিলাতী আচারের অন্ধ অনুকরণ, প্ৰগতি ও সংস্কৃতির নামে ইংরেজসেবার বিরুদ্ধে তীব্র ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করতেন ‘পঞ্চানন্দ’। বঙ্কিমের ভাষায় বাঙলার জীবন ও সাহিত্যাকাশে তিনি ‘হেলির ধূমকেতু’। ‘উৎকৃষ্ট কাব্যম’ (১৮৭০, ব্যঙ্গকাব্য), ‘কল্পতরু’ (১৮৭৪, উপন্যাস), ‘ভারত-উদ্ধার’ (১৮৭৮, ব্যঙ্গকাব্য), ‘ক্ষুদিরাম’ (১৮৮৮, উপন্যাস) প্রভৃতি গ্রন্থের রচয়িতা। পাঁচটি সর্গে সম্পূর্ণ, অমিত্ৰাক্ষর ছন্দে রচিত তার ‘ভারত-উদ্ধার’ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যঙ্গকাব্য। ১৮৭৮ খ্রী. ‘পঞ্চানন্দ’ নামে ব্যঙ্গাত্মক মাসিক পত্রিকা প্ৰকাশ শুরু করেন। পরে পত্রিকাটি ‘বঙ্গবাসী’ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হয়। বঙ্গবাসী-তে রচিত চুটুকিগুলি পরে ‘পাঁচু ঠাকুর’ গ্রন্থমালায় (৫ম খণ্ড) সঙ্কলিত হয়েছে। এ ছাড়াও বঙ্গবাসী পত্রিকায় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্ৰবন্ধ লিখেছিলেন। তিনি ‘বাংলা ভাষার সংস্কার’ শীর্ষক এক প্রবন্ধে সংস্কৃতের ছাঁচে ঢেলে বাংলা ভাষার ব্যকরণ প্রণয়নের অসঙ্গতি বোঝাতে চেয়েছিলেন।
পূর্ববর্তী:
« ইন্দ্ৰনাথ নন্দী
« ইন্দ্ৰনাথ নন্দী
পরবর্তী:
ইন্দ্ৰমুখী »
ইন্দ্ৰমুখী »
Leave a Reply