অ্যান্ড্রুজ, চার্লস ফ্রীয়র, দীনবন্ধু–৫-৪-১৯৪০) নিউক্যাসল-অন-টাইন–ইংল্যাণ্ড। জন এড়ুইন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্র। কিছুদিন ধর্মযাজকের কাজ করেন। পরে কেমব্রিজের ফেলোরূপে অধ্যাপনার পর ১৯০৪ খ্রী. কেমব্রিজ মিশনের সহায়তায় ভারতে আসেন। দিল্লীর সেন্ট স্টিফেন্স কলেজে অধ্যাপনাকালে অধ্যক্ষ সুশীল রুদ্রের প্রভাবে ভারত সম্পর্কে অনুসন্ধিৎসা জাগে। ক্রমে বক্তৃতা ও রচনায় মিশনারীদের ভেদবুদ্ধি ও অসাম্যের নিন্দ করায় স্ব-সমাজে নিন্দিত ও ভারতীয় সমাজে আদৃত হন। ১৯১২ খ্রী. ইংল্যাণ্ডে রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলি পাঠসভা থেকে রবীন্দ্রানুরাগী হন। ক্ৰমে ধর্মবিষয়ে অন্তৰ্দ্ধন্দ্ব ও ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতি আকর্ষণের ফলে ১৯১৪ খ্রী. শান্তিনিকেতনে যোগ দেন। এর পূর্বেই গান্ধীজীর সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকায় সত্যাগ্ৰহ আন্দোলনে যোগ দিয়ে সুপরিচিত হয়েছিলেন। এইভাবে অ্যান্ড্রুজ হয়েছিলেন গান্ধীজী ও রবীন্দ্রনাথের মধ্যে সংযোগ–রক্ষায় প্রধান ব্যক্তি (দ্বিজেন্দ্রনাথের ভাষায় হাইফেন)। উৎপীড়িতের প্রতি তার জীবনব্যাপী সেবা কাজের তালিকা; ফিজি দ্বীপে ভারতীয় শ্রমিক ইনডেন্টার’ প্রথার উৎসাদিন, রাজপুতানায় বেগার প্রথা ও হংকং-এ ভারত থেকে বেআইনী আফিম রপ্তানির বিরোধিতা, ভারতীয় রেল ধর্মঘটের মীমাংসা। আসাম থেকে চলে-আসা চা-কলোনীর শ্রমিকদের ওপর গুর্খা পুলিসের অত্যাচারের প্রতিবাদে ১৯২১ খ্রী. যে ধর্মঘট হয়েছিল, তিনি সেই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। ঐ সময়ে তার প্রতিদিনের বিবৃতি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। ‘ওপ্রেশন অফ দি পুওর’ নাম দিয়ে তিনি যে প্ৰবন্ধ লিখেছিলেন, পরে তা গ্ৰন্থাকারে প্রকাশিত হয়। এই সূত্রে অল ইন্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের সভাপতিত্ব করেন। গান্ধীজীর কর্মজীবনের অনেক সঙ্কটে সহায়তা করেন, রবীন্দ্রনাথের বিদেশীযাত্রায় সঙ্গী হন এবং কখনও-বা রবীন্দ্রনাথের অনুপস্থিতিতে আশ্রম পরিচালনার দায়িত্ব গ্ৰহণ করেন। শেষ-জীবনে খ্ৰীষ্টান সমাজ তাকে স্ব-সমাজে ফিরিয়ে নেয়। ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামে সহানুভূতিশীল এই ইংরেজ মনীষীকে এদেশীয় জনগণ ‘দীনবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন। রচিত গ্ৰন্থ : ‘দি রেনেসাস ইন ইন্ডিয়া’, ‘হোয়াট আই য়ো টু ক্রাইস্ট’, ‘দি টু ইন্ডিয়া’, ইত্যাদি।
পূর্ববর্তী:
« অহীন্দ্ৰ চৌধুরী, নটসূৰ্য
« অহীন্দ্ৰ চৌধুরী, নটসূৰ্য
পরবর্তী:
অয়স্কান্ত বকসী »
অয়স্কান্ত বকসী »
Leave a Reply