আবদুর রেজ্জাক খান (জুন, ১৯০০ – ২৮.১.১৯৮৪) হাকিমপুর — চব্বিশ পরগনা। পূর্বপুরুষ ওয়াহাবি বিদ্রোহের অন্যতম নায়ক ছিলেন। কিশোর বয়স থেকেই বিপ্লবীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন। সুপরিচিত ‘রেশমীরুমাল’ দলের মুসলমান তরুণদের নিয়ে বিপ্লবীদল গঠন করেন এবং বিপিনবিহারী গাঙ্গুলীর সংস্পর্শে আসেন। বিশের দশকে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়ে কারাবরণ করেন। সশস্ত্ৰ বিপ্লবীদের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগ ছিল। গোপনে অস্ত্ৰ সংগ্রহ করে তিনি বিপ্লবীদের অস্ত্ৰ যোগান দিয়েছেন। হিজলী জেলের শহীদ সন্তোষ মিত্র ছিলেন তাঁর অন্যতম সঙ্গী। বিশের দশকের গোড়াতেই সোভিয়েত রাশিয়া, সমাজতন্ত্র ও কমিউনিষ্ট মতবাদের প্রতি আকৃষ্ট হন। কমিউনিষ্ট আন্তর্জাতিকের দলিলেও তার নাম উল্লেখ আছে। মীরাট ষড়যন্ত্র মামলার পূর্বে বঙ্গদেশে যে চারজন কমিউনিষ্ট ছিলেন, তিনি তাদের অন্যতম-অপর তিনজন ছিলেন। মুজফফর আহমদ, শামসুল হুদা ও আবদুল হামিদ। বাংলার শ্রমিক আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ তিনি বিশের দশকেই বঙ্কিম মুখার্জীর সঙ্গে একযোগে মেটিয়াবুরুজ-ব্যারাকপুরের বিত্তীর্ণ অঞ্চলে শ্রমিক-আন্দোলন সংগঠিত করেন। ১৯২৬ খ্রী. স্থাপিত ‘ওয়ার্কার্স এন্ড পেজেন্টস’ পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, ১৯২৯ খ্রী. ঐতিহাসিক চটকল ধর্মঘটে অন্যতম নায়ক ও ১৯৩০-৩৬ খ্রী. বিনা বিচারে কারারুদ্ধ থাকার সময়ে কমিউনিষ্ট কনসলিন্ডেশনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। মুক্তিলাভের পর ১৯৩৬ খ্রী. সারাভারত কিষাণ সভার কাজ করতে থাকেন। ১৯৪১ খ্রী. কারারুদ্ধ হন এবং ১৯৪৩ খ্ৰী কমিউনিষ্ট পার্টি আইনী ঘোষিত হলে মুক্তিলাভ করেন। স্বাধীন ভারতে ১৯৪৮ খ্রী. পার্টি বে-আইনী হলে গ্রেপ্তার হয়ে ১৯৫২ খ্রী. পৰ্যন্ত কারারুদ্ধ থাকেন। ১৯৬৩ খ্ৰী. পার্টির পক্ষ থেকে ব্লাজ্য সভার সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ খ্ৰী. হাসনাবাদ কেন্দ্র থেকে বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হন এবং দ্বিতীয় যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভায় ত্ৰাণমন্ত্রী ছিলেন। তিনি কিছুদিন সাংবাদিকতাও করেছেন।
পূর্ববর্তী:
« আবদুর রহীম খান লাহুরী
« আবদুর রহীম খান লাহুরী
পরবর্তী:
আবদুল আলী, নওয়াবজাদা, এ.এফ.এম. »
আবদুল আলী, নওয়াবজাদা, এ.এফ.এম. »
Leave a Reply