আনন্দচন্দ্ৰ মিত্ৰ (১৮৫৪–১৯০৩) বজ্রযোগিনী — ঢাকা। বঙ্গচন্দ্ৰ। দীর্ঘকাল ময়মনসিংহ জেলায় শিক্ষকতা কয়ারর পর শেষজীবনে কলিকাতা কর্পোরেশনে উচ্চপদে চাকরি করেন। ব্ৰাহ্মমতাবলম্বী এবং সাধারণ ব্ৰাহ্মসমাজের একজন বিশিষ্ট সদস্য ছিলেন। ১৮৭৬ খ্রী. শিবনাথ শাস্ত্রীর গুপ্তচক্ৰে বিপিন পাল, সুন্দরীমোহন দাস প্রমুখদের সঙ্গে অগ্নি প্ৰদক্ষিণ করে, নিজের বুকের রক্ত দিয়ে প্ৰতিজ্ঞাপত্রে স্বাক্ষর করে স্বদেশপ্রেমের এবং ত্যাগের মন্ত্রে দীক্ষা গ্ৰহণ করেন। মধুসূদন ও গ রবীন্দ্রনাথের মধ্যবর্তী কালের মহাকাব্য-রচয়িতাদের মধ্যে তাঁর এক বিশিষ্ট আসন আছে। প্রায় ১১টি বৃহৎ কাব্যগ্রন্থের মধ্যে ‘মিত্রকাব্য’ ১ম (১৮৭৪), ২য় (১৮৭৭), ‘হেলেনাকাব্য’ ১ম ও ২য় এবং ‘ভারতমঙ্গল’ তাকে বিস্তৃত কবিখ্যাতি দিয়েছে। ‘ভারতমঙ্গল’ পূর্বখণ্ড আধুনিক যুগ নিয়ে রচিত। তার রচনায় স্বদেশগ্ৰীতি সুস্পষ্ট। কাব্য ছাড়া গদ্য ও পদ্যে পাঠ্যপুস্তক এবং রাগপ্রধান সঙ্গীতও রচনা করেছেন। পথিক-ভণিতাযুক্ত তার অনেক গান আছে। তার ‘ভারত শ্মশান মাঝে আমি রে। বিধবা বালা’ গানটি এককালে বিশেষ প্ৰসিদ্ধ ছিল। এককালে তাঁর ‘পদ্যশিক্ষাসার’, ‘কবিতাসার’ প্রভৃতি নীতিমূলক কবিতা ছাত্রসমাজে আদৃত ছিল। কুচবিহার-বিবাহের প্রতিবাদে ‘কপালে ছিল বিয়ে কাঁদলে হবে কি!’ নামে একখানি ক্ষুদ্র ব্যাঙ্গাত্মক নাটিকাও তিনি রচনা করেছিলেন।
পূর্ববর্তী:
« আনন্দচন্দ্ৰ বেদান্তবাগীশ
« আনন্দচন্দ্ৰ বেদান্তবাগীশ
পরবর্তী:
আনন্দচন্দ্ৰ শিরোমণি »
আনন্দচন্দ্ৰ শিরোমণি »
Leave a Reply