আনন্দকিশোর মজুমদার (১৮৮২ – ১৯৪০) কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ। স্বাধীনতা সংগ্ৰামী। ময়মনসিংহে হেমেন্দ্ৰকিশোর আচাৰ্য, মোহিনী শঙ্কর রায় ও তার চেষ্টায় ‘সাধনা সমাজ’ গঠিত হয়। ১৯০৬ খ্রী. যতীন্দ্রনাথ মুখার্জী ও অরবিন্দ ঘোষের সংস্পর্শে এসে তারা সশস্ত্ৰ বিপ্লবের জন্য প্ৰস্তুত হতে থাকেন। সরকারী আদেশে ‘সাধনা সমাজ’ বেআইনী ঘোষিত হলে বিপ্লবী যুগান্তর দল গুপ্তপথে চালিত হয়। এ সময় তিনি কিশোরগঞ্জ, বাজিতপুর, আঠারোবাড়ি, ঈশ্বরগঞ্জ, শ্ৰীহট্ট, কুমিল্লা প্রভৃতি স্থানে সমিতির শাখা-প্ৰশাখা ও কার্যক্রম বিস্তার করতে থাকেন। এই দলের সঙ্গে ময়মনসিংহের প্রখ্যাত নেতা সুরেন্দ্রমোহন ঘোষ তার অনুগামীদের নিয়ে মিলিত হন। এই সময় তার চেষ্টায় ময়মনসিংহের অনুশীলন দল, সুহৃদ সমিতি প্রভৃতি একত্রিত হয়ে একটি শক্তিশালী দলে পরিণত হয়। এই দলের কর্মী নরেশ চৌধুরী, মণি চৌধুরী, ক্ষিতীশ চৌধুরী, সঞ্জাব রায় প্রভৃতি অসম-সাহসিকতা ও বীরত্বের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। ময়মনসিংহ ও কলিকাতায় গুপ্তচর ও দারোগাদের বিনাশসাধন, ডাকাতি করে অর্থসংগ্ৰহ, জনমনে স্বদেশী ভাব উদ্দীপন প্রভৃতি কাজে লিপ্ত থাকার জন্য ১৯১৬ খ্রী. ধরা পড়েন। ১৯১৯ খ্রী. ছাড়া পান। ১৯২৩ খ্রী. তারকেশ্বর সত্যাগ্রহে তিনি বহু কমিসহ অংশগ্ৰহণ করেন। ১৯২৪ খ্রী. তিন আইনে ধরা পড়ে ১৯২৭ খ্রী. পর্যন্ত বহরমপুর জেলে থাকেন। ১৯২৮ খ্রী. কলিকাতা কংগ্রেসের দশ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের খাওয়াবার ভার তাঁর উপর ছিল। ১৯৩০ খ্রী. সত্যাগ্ৰহ করায় আটক আইনে গ্রেপ্তার হয়ে ১৯৩৫ খ্রী. পর্যন্ত বক্সা ক্যাম্পে থাকেন। ১৯৩৬ খ্রী. মুক্তি পেয়ে ময়মনসিংহ জেলার কংগ্রেস কমিটির সম্পাদক হিসাবে কাজ করার সময় দুরন্ত ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হন ও চিকিৎসার জন্য কলিকাতায় আসেন। এখানেই মৃত্যু।
পূর্ববর্তী:
« আনন্দ নন্দী, স্বামী
« আনন্দ নন্দী, স্বামী
পরবর্তী:
আনন্দকৃষ্ণ বসু »
আনন্দকৃষ্ণ বসু »
Leave a Reply