আকরম খাঁ, মওলানা মোহাম্মদ (১৮৬৮ – ১৯৬৮) হাকিমপুর — চব্বিশ পরগনা। আলহাজ গাজী মওলানা আবদুল বারী। কায়েদে আজম জিন্নার সুযোগ্য সহকর্মী এবং নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক নেতা। সাংবাদিক হিসাবে এবং আরবী, ফারসী, উর্দু, সংস্কৃত ও বাংলা ভাষায় সুপণ্ডিত বলেও খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। উচ্চশিক্ষার জন্য তিন বছর কলিকতা ও পাটনাতে কাটান। ধর্মীয় ‘আলিয়া মাদ্রাসা’য় পড়াশুনা করে কৃতিত্বের সঙ্গে পরীক্ষায় পাশ করেন। ঢাকায় অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত শিক্ষা সম্মেলনে (১৯০৬) যোগ দেন। কর্মজীবনে প্রবেশ করে বাঙলার মুসলমানদের ধর্মীয় তথা সামাজিক জীবনের উন্নতিবিধানকল্পে সাপ্তাহিত ‘মোহাম্মদী’ প্রকাশ করেন (১৯১০)। উক্ত পত্রিকাটি তার বাংলা ও ইংরেজী ভাষায় বুৎপত্তির পরিচায়ক। ১৯০৫ খ্রী. বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯০৬ খ্রী. মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য হন। অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলনে কাজ করতে গিয়ে উর্দু ‘জামানা’ পত্রিকা ও বাংলা দৈনিক ‘সেবক প্ৰকাশ করেন। ‘সেবক’ পত্রিকায় প্ৰকাশিত নির্ভীক মতবাদের জন্য এক বছর তাকে কারাবাস করতে হয়। কারাবাস-কালে ‘আমপারা’র বঙ্গানুবাদ রচনা করেন। নেহেরু রিপোর্টের জন্য (১৯২৯) কংগ্রেস ছেড়ে তিনি মুসলিম লীগের আদর্শরূপায়ণে আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৩৫ খ্ৰী. নির্বাচনে জয়লাভ করে বঙ্গীয় ব্যবস্থা পরিষদের সদস্য হন। ১৯৩৬ খ্রী. তার সম্পাদনায় দৈনিক ‘আজাদ’ প্ৰকাশিত হয়। এই সময় কায়েদে আজমের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে থেকে পাকিস্তান আন্দোলনকে সাফল্যমণ্ডিত করেন। ১৯৪১ –১৯৫১ খ্ৰী. প্ৰাদেশিক মুসলিম লীগের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ১৯৪৭ খ্ৰী. মুসলিম লীগেরও ভাইস-প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ১৯৪৭ খ্রী. দেশ বিভাগের পর ঢাকায় স্থায়িভাবে থাকতেন। নিখিল ভারত মুসলিম লীগ ও পরে পাকিস্তান মুসলিম লীগেরও ভাইস-প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ১৯৫৪ খ্রী. গণপরিষদ ভেঙ্গে দেওয়া হলে তিনি প্ৰত্যক্ষ রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান। ১৯৬২ খ্রীপুনরায় ‘আজাদ’ পত্রিকার প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সংস্পর্শে আসেন। উল্লেখযোগ্য রচনা : ‘সমস্যা ও সমাধান’, ‘মোস্তফা চরিত’, ‘মোস্তফা চরিত্রের বৈশিষ্ট্য’, ‘বাইবেলের নির্দেশ ও প্রচলিত খৃষ্টান ধর্ম’, ‘মুসলিম বাঙলার সামাজিক। ইতিহাস’, ‘তফসীরুল কোরআন (৫ খণ্ড) প্রভৃতি। সাহিত্যক্ষেত্রে তাঁর বিশিষ্ট অবদানের জন্য তিনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের ‘গৌরবসূচক পদক’ (প্রাইড অফ পারফরম্যান্স মেডাল) লাভ করেন। ১৯২৮ খ্রী. পবিত্র হজ। সম্পন্ন করেন।
পূর্ববর্তী:
« আকবর হোসেন (সাহিত্যিক)
« আকবর হোসেন (সাহিত্যিক)
পরবর্তী:
আকরামুজ্জমান, খানবাহাদুর »
আকরামুজ্জমান, খানবাহাদুর »
Leave a Reply