অম্বিকা চক্রবর্তী (১৮৯২ – ৬.৩.১৯৬২) বর্মা-চট্টগ্রাম। নন্দকুমার। প্রথম মহাযুদ্ধের সময় ১৯১৬ খ্রী. শেষভাগে বিপ্লবী দলের কাজে জড়িত থাকায় গ্রেপ্তার হন। ১৯১৮ খ্রী. মুক্তি পান ও বিপ্লবীনায়ক সূর্য সেনের সঙ্গে যোগ দিয়ে চট্টগ্রামে একটি গোপন বিপ্লবী দল গড়ে তোলেন। ১৪-১২-১৯২৩ খ্রী. রেল কোম্পানীর টাকা ডাকাতি করার পর চট্টগ্রাম শহরের প্রান্তে তাদের গোপন ঘাঁটি পুলিস ঘিরে ফেলে। অবরোধ ভেদ করে পালিয়ে যাবার পর নাগরখানা পাহাড়ে পুলিসের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ হয়। ঐ যুদ্ধে আহত হয়ে মাষ্টারদা ও তিনি বিষ পান করেন; কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে যান ও পরে গ্রেপ্তার হয়ে বিচারে মুক্ত হন। ১৯২৪ খ্রী. বাঙলার অন্যান্য বিপ্লবীদের সঙ্গে পুনরায় গ্রেপ্তার হয়ে কংগ্রেসের কলিকাতা অধিবেশনের কিছু আগে মুক্তি পান (১৯২৮)। চট্টগ্রাম দলের চূড়ান্ত পর্যায়ে সংগ্রামের দিন ১৮-৪-১৯৩০ খ্রী. তার নেতৃত্বে একটি ক্ষুদ্র দল শহরের টেলিফোন ও টেলিগ্ৰাফ-ব্যবস্থা ধবংস করে। আত্মরক্ষার জন্য পাহাড় অঞ্চলে চারদিন অভুক্ত অবস্থায় থাকার পর ২২-৪-১৯৩০ খ্রী. পুলিস ও মিলিটারীর এক বিরাট বাহিনীর সঙ্গে জালালাবাদের যুদ্ধে, গুরুতরভাবে আহত হন। সঙ্গীরা তাকে মৃত মনে করে ত্যাগ করে চলে যায়। গভীর রাতে জ্ঞান ফিরে আসে ও পাহাড় ত্যাগ করে একটি নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। কয়েক মাস পরে ধরা পড়েন। বিচারে প্রথমে প্ৰাণদণ্ড ও পরে আপীলে যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর দণ্ড হয়। ১৯৪৬ খ্রী. মুক্তি পাবার পর কমিউনিস্ট আন্দোলনে যোগ দেন। দেশবিভাগের পর উদ্বাস্তু পুনর্বাসনের চেষ্টায় একটি সমবায় গঠন করেন। প্ৰথম সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বঙ্গীয় বিধান সভার সদস্য হন। ১৯৪৮ খ্রী. ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি বেআইনী ঘোষিত হলে আত্মগোপন করেন। ১৯৪৯–৫১ খ্ৰী. পুনরায় কারাবাস করেন। কলিকাতার রাজপথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু।
পূর্ববর্তী:
« অমৃতলাল সরকার
« অমৃতলাল সরকার
পরবর্তী:
অম্বিকাচরণ গুপ্ত »
অম্বিকাচরণ গুপ্ত »
Leave a Reply